বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন সরকার বলেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী শক্তিকে দমন করার জন্য আয়নাঘর তৈরি করেছিলো যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
তিনি বলেন, খুনিদের দল আওয়ামী লীগের অপরাধীদের বিচার করতে হবে। গণতন্ত্র আর আওয়ামী লীগ একসাথে চলে না। তারা পিলখানায় হত্যা করেছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্বকে বিচারিক হত্যা করেছে। আল্লামা সাঈদীকে মেডিকেল কিলিং করা হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে পুনঃ তদন্ত দাবি করেন। আগামীতে ইসলামী শক্তির পক্ষে কাজ করতে তিনি আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান হয়েছে।
তিনি বলেন, রমযান মাস হচ্ছে কুরআন নাযিলের মাস তাই এই পবিত্র মাসের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে আইনজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে। এই শিক্ষা শুধু রমযান মাস নয়, বছরের প্রতিটি মাসেই ধরে রাখতে হবে। তাহলে ইহকালিন সফলতা ও পরকালিন মুক্তি নিশ্চিত হবে।
সোমবার (১৭ মার্চ) বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল খুলনার উদ্যোগে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির ১নং হলরুমে আইনজীবীদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল খুলনার সভাপতি এডভোকেট লস্কর শাহ আলমের সভাপতিত্বে ও এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা এবং এডভোকেট আওছাফুর রহমান এর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল খুলনা শাখার সহ সভাপতি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, এডভোকেট মো. আনছার উদ্দিন, এডভোকেট মো. লিয়াকত আলী সরদার ও এডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা জজ কোর্টের জিপি এডভোকেট ড. মো. জাকির হোসেন, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির পরিচলনা পরিষদের আহবায়ক এডভোকেট আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু, সদস্য সচিব এডভোকেট নূরুল হাসান রুবা, খুলনা জেলা দায়রা জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট চৌধুরী তৌহিদুর রহমান তুষার, মহানগর দায়রা জজ এর এডভোকেট শহিদুল ইসলাম, খুলনা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোল্লা মাসুম রশীদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মশিয়ুর রহমান নান্নু, এডভোকেট আক্তার জাহান রুকু, মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, এডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এডভোকেট আবুল খায়ের, এডভোকেট মাহতুব রহমান কচি, এডভোকেট মহিবুর রহমান, এডভোকেট খান লিয়াকত আলী, এডভোকেট শাহ সুজায়েত হোসেন, এডভোকেট মো. আব্দুল মান্নান, মো. আবুল হাসান, মো. রুহুল আমিন, মো. বোরহান উদ্দিন, এডভোকেট মো. শামছুল হক, এডভোকেট মো. শামিমুল ইসলাম, এডভোকে মো. কামাল হোসেন, এডভোকেট সেলিম আল আজাদ, এডভোকেট মইনুল ইসলাম জীবন, এডভোকেট মো. আলিনূর, মো. মোরশেদ প্রমুখ।
পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন ক্বারী মুফতি মাওলানা মাহদী হাসান কাওসারী। ইফতার মাহফিলে বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, সভ্যতার পরিবর্তন করতে পারে একটি মাত্র আদর্শ তা হচ্ছে আল কুরআন। মানুষ কুরআনের বিশালত্ব বুঝে না বলেই পৃথিবীতে সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্রসহ প্রায় ১৭টি পথের পরিবর্তনের পরেও পৃথিবীতে শান্তির পরিবর্তন ঘটেনি। তিনি বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মকে ইসলামের সু-মহান আদর্শের আলোকে গড়ে তুলতে হবে। পরিবার ও রাষ্ট্র সমাজ সর্বক্ষেত্রে নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে হবে। এ জন্য আধিপত্যবাদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে সকলকে আল্লাহর উপর তায়াক্কুল করে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫টি বছর জাতির ঘাড়ে একটি দস্যু সরকার চেপে বসেছিল। জাতিসংঘ রিপোর্ট দিয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে গণহত্যা চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সংস্থাটিই বলেছে ১৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকার জাতিকে ৩টি হাস্যকর নির্বাচন উপহার দিয়েছে, একটা হচ্ছে ভোটারবিহীন, একটা মধ্যরাতের আর আরেকটা ডামি ভোটের। তারা উন্নয়নের নামে লুটপাট করে জাতির সাথে প্রতারণা করেছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই দেশকে সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে হবে। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এক্ষেত্রে আইনজীবীগণকে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।’
সভাপতির বক্তৃতায় এডভোকেট লস্কও শাহ আলম বলেন, ‘পবিত্র মাহে রমযান হচ্ছে মানবতার মুক্তি সনদ মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিলের মাস। এই মাস হচ্ছে আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাস। ইসলামের সকল বিধান শুধু মুসলমান নয়, গোটা মানবজাতির জন্য কল্যাণকর। মাহে রমযান থেকে শিক্ষা নিয়ে তাকওয়াভিত্তিক জীবন পরিচালনার শপথ নিতে হবে। ইসলাম মানবাধিকার, সাম্য ও ন্যয় বিচার প্রতিষ্ঠার কথা বলে। তাই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবিদের কাজ করার শপথ নিতে হবে। তাহলে ইহকালিন সাফল্য ও পরকালিন মুক্তির পথ প্রশ্বস্ত হবে।