স্বপ্ন ছিল আইএএস অফিসার হবেন। কিন্তু অধরা থেকে গেল সেই ইচ্ছে। তার বদলে ছুঁয়ে ফেললেন অন্য স্বপ্নের দুনিয়া। নায়িকা হয়ে ইয়ামি গৌতম শাসন করলেন বলিউড।
হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুরে ইয়ামির জন্ম ১৯৮৮ সালের ২৮ নভেম্বর। তার বাবা ছিলেন পঞ্জাবি ছবির পরিচালক। বাড়িতে ফিল্মি পরিবেশ থাকলেও ছোট থেকে নায়িকা হওয়ার কোনও ইচ্ছে ছিল না ইয়ামির।
স্কুলের পরে তিনি কলেজে ভর্তি হন আইনের ছাত্রী হিসেবে। কিন্তু নিয়মিত ক্লাস করতে পারলেন না। ততদিনে শুরু হয়েছে অভিনয়। বই খাতা ও লাইট-সাউন্ড-ক্যামেরার দু’নৌকায় পা রেখে চলা আর সম্ভব হল না। ছেড়ে দিলে কলেজ।
কুড়ির কোঠায় পা রাখা ঝকঝকে তরুণী কেরিয়ার শুরু করলেন বিনোদন দুনিয়ায়। তার প্রথম কাজ টেলিভিশনে। ‘চাঁদ কে পার ছালো’, ‘রাজকুমার আরিয়ান’ এবং ‘ইয়ে প্যায়ার না হোগা কম’ তাঁর ছোট পর্দার কাজগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
বলিউডে সুযোগ পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হল ২০১২ সাল অবধি। তার আগে অবশ্য কন্নড় ছবিতে অভিনয় করে ফেলেছন। প্রথম হিন্দি ছবি ‘ভিকি ডোনার’ দিয়েই ইন্ডাস্ট্রিতে বাজিমাত ইয়ামির।
ছবিতে আয়ুষ্মান খুরানার বিপরীতে ইয়ামি অভিনয় করেছিলেন বাঙালি তরুণী অসীমা রায়ের ভূমিকায়। বক্স অফিসে সুপারহিট হয়েছিল সুজিত সরকার পরিচালিত এই ছবি। একাধিক পুরস্কার পেয়েছিলেন ইয়ামি।
দু’বছরের বিরতির পরে ফের বলিউডে ফিরে আসেন ইয়ামি। অভিনয় করেন ‘অ্যাকশন জ্যাকসন’, ‘বদলাপুর’, ‘সনম রে’, ‘জুননিয়ৎ’র মতো ছবিতে। উজ্জ্বল ও নিখুঁত ত্বকের অধিকারিণী এই সুন্দরীর কাছে বিজ্ঞাপনের সুযোগও আসতে থাকে।
হিন্দি সিনেমার গতধরা নায়িকা হিসেবে থাকতে চাননি ইয়ামি। বিভিন্ন ধরনের চিত্রনাট্যে নিজেকে মেলে ধরেছেন বিভিন্ন উপায়ে। তার ফিল্মোগ্রাফিতে নতুন নতুন পালক যোগ করেছে ‘কাবিল’, ‘সরকার থ্রি’, ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’, ‘বালা’র মতো বৈচিত্রপূর্ণ স্বাদের ছবি।
বেছে বেছে ছবি করতে ভালবাসেন ইয়ামি। তুলনায় কম ছবিতে অভিনয় করেও ইয়ামির পুরস্কারভাগ্য অন্যান্য নায়িকাদের কাছে ঈর্ষণীয়। কেরিয়ারে যশ ও খ্যাতির হাত ধরে এসেছে বিতর্কও।
‘সনম রে’ ছবির সহনায়ক পুলকিত সম্রাটের সঙ্গে ইয়ামির ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’ এক সময় ছিল ইন্ডাস্ট্রির মুখরোচক গুঞ্জন। তার সঙ্গে পরকীয়াতেই নাকি ভাঙে পুলকিতের সংসার। পরে বিচ্ছেদ হয়ে যায় পুলকিত-ইয়ামিরও।
২০১৪ সালে পুলকিত বিয়ে করেন তার বহু দিনের বান্ধবী শ্বেতা রোহিরাকে। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছেন তারা।
ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পরের বছর মিসক্যারেজ হয় শ্বেতার। সে সময় তিনি তার মায়ের কাছে গিয়ে ছিলেন বিশ্রাম নেওয়ার জন্য। গুঞ্জন, এই সময়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন পুলকিত-ইয়ামি। একই ছবিতে কাজ করার সুবাদে দু’জনে একই জিমে শরীরচর্চা করতেন।
একসঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি ছবির সেটে পুলকিতের জন্য বাড়িতে রান্না করা খাবারও নিয়ে যেতেন ইয়ামি। দাম্পত্যে তৃতীয় কোণের উপস্থিতি মানতে পারেননি শ্বেতা। পুলকিতকে ছেড়ে চলে যান সলমন খানের পাতানো বোন শ্বেতা।
ব্রেক আপের পরে নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত পেশায় ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক শ্বেতা। অন্য দিকে পুলকিত নাকি ডেটিং করছেন ‘বীরে দি ওয়েডিং’ ছবিতে তার নায়িকা কৃতী খরবান্দার সঙ্গে।
শোনা যায়, বিবাহবিচ্ছেদের জন্য ইয়ামিই নাকি এক সময়ে চাপ দিতেন পুলকিতকে। যাতে তারা নিজেদের সম্পর্ক সবাইকে জানাতে পারেন। কিন্তু শ্বেতা সরে যাওয়ার পর ভেঙে যায় পুলকিত-ইয়ামি প্রেমও।
আপাতত নিজের কেরিয়ারেই মন দিয়েছেন ‘বালা’র পরী। এ বছর তার ‘জিনি ওয়েডস সানি’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা। অভিনয়ের সঙ্গে আংশিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন স্নাতক স্তরের পড়াশোনাও। অবসরে ভালোবাসেন বই পড়তে, ঘর সাজাতে আর গান শুনতে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।