দেশে ঈদের জামাত উন্মুক্ত স্থানে করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে ঈদের জামাত শেষে যেন কোলাকুলি না করা বা হাত মেলানো না হয়, সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মে) দুপুরে ভার্চুয়ালি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা।
এর আগে অবশ্য ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে খোলা মাঠে ঈদ জামাত আয়োজনে নিরুৎসাহিত করা হয়। আর ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, গত বছরের মতো এ বছরও জাতীয় ঈদগাহের পরিবর্তে বায়তুল মোকাররমে ঈদ জামাত আয়োজন করা হবে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ফ্লোরা বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘ঈদ জামাত কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে উন্মুক্ত জায়গায় আয়োজন করা যায় সেই বিষয়টি লক্ষ্য রাখার জন্য জনসাধারণ এবং মসজিদ সংশ্লিষ্ট আলেম-ওলামা যারা আছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিকল্প পদ্ধতিতে ঈদ জামাত আয়োজন করার জন্য বলছি।’
তিনি বলেন, ‘ঈদ জামাত পরবর্তী সময়ে আমাদের একটা রীতি হচ্ছে কোলাকুলি করা কিংবা হাত মেলানো। সেটাও কিন্তু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণ। সুতরাং এক্ষেত্রে ঈদের সময় আমরা কোলাকুলি না করি আর হাতও না মেলাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জীবনে আরও অনেক ঈদ উপভোগ করতে চাই। কিন্তু আমরা এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নেই। সুতরাং এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যে ঈদ সামনে এসেছে সেটাকে যদি আমরা ঘরের মধ্যে সীমিত আকারে পালন করি। তাহলেই জীবনে আরও অনেক ঈদ উপভোগ করার সুযোগ আসবে।
অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘যেভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, উন্নত দেশ পর্যন্ত রোগীর চাপ নিতে পারছে না। দেশের প্রস্তুতিরও কিন্তু সব সময় একটা সীমাবদ্ধতা থাকবে। সেজন্য রোগীর সংখ্যা যেন কোনোভাবে বৃদ্ধি না পায়, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের ঈদের এই যাত্রা বন্ধ করি। ঘরের মধ্যে থেকে ঈদ উদযাপন নিজেদের মধ্যে যাতে সীমাবদ্ধ রাখি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর খোলা মাঠে ঈদ জামাত আয়োজনের পরামর্শ দিলেও এর আগেই খোলা ময়দানের পরিবর্তে মসজিদে ঈদ জামাত আয়োজনের নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে একাধিক জামাত আয়োজন করতে বলা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতোই মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি ও পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করতে অনুরোধ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এরই মধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনও জানিয়েছে, ঈদের দিন জাতীয় ঈদগাহ নয়, ঈদের জামাত হবে বায়তুল মোকাররমে। সকাল ৭টা থেকে সকাল পৌনে ১১টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট বিরতিতে জাতীয় মসজিদ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঁচটি ঈদ জামাত হবে বলে জানানো হয়েছে।