অনলাইন ডেস্কঃবাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি’র সভাপতি, সাবেক ডাকসু ভিপি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দেশে আইন শাসন, ন্যায় বিচার না থাকার কারণে কমরেড রতন সেন হত্যার যেমন বিচার হয়নি, তেমনি কোনো হত্যাকান্ড, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার হচ্ছে না। তিনি বলেন, দেশে ডেঙ্গু, চিকুগুনিয়া মহামারী আকার ধারণ করলেও প্রতিরোধে কোনো উল্লেখ্যযোগ্য উদ্যোগ নেই। সরকারের দার্য়িত্বশীলদের বক্তব্যে মনে হয় দেশের জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়ই নেই এবং তাদের বক্তব্য স্ববিরোধী।
তিনি বিকেলে নগরীর শহিদ হাদিস পার্কে কমিউনিস্ট নেতা সিপিবি জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি কমরেড রতন সেনের ২৭তম হত্যাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। সিপিবি খুলনা জেলা কমিটি এ জনসভার আয়োজন করে।
সাবেক ডাকসু ভিপি বলেন, জাতির সামনে আজ মূল সমস্যাগুলো হলো লুটপাট, গণতন্ত্রহীনতা, মৌলবাদ, সাম্রাজ্যবাদ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে স্বৈরাচারী ব্যবস্থাকে কায়েম করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়া যায় না। বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে ভুলুণ্ঠিত করেছে। একতরফা নির্বাচন দিয়ে রাতে ভোট কেটে ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ধুয়া তুলে নির্বাচন বা সরকারকে বৈধ করা যায় না। একদিকে ধানের দাম কমিয়ে কৃষককে সর্বশান্ত করা হচ্ছে, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। শিল্পকারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের বেকার করা হচ্ছে। বেকারত্বের মিছিলে প্রতিদিন নতুন নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছে।
কমরেড সেলিম বলেন, উন্নয়নের নামে সীমাহীন লুটপাট, দুর্নীতি করে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পঙ্গু করা হচ্ছে। পরিবেশ প্রকৃতি ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক বন সুন্দরবন আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তিনি বলেন, রামপালের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প যদি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর না হয় তবে অন্যস্থানে করা হচ্ছে না কেন।
জনসভায় তিনি এ ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। সাথে সাথে সাধারণ জনগণকেও এ আন্দোলনের সাথে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
সিপিবি’র খুলনা জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য ডাঃ মনোজ দাশের সভাপতিত্বে এবং নগর সাধারণ সম্পাদক এড. মোঃ বাবুল হাওলাদারের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য এস এ রশীদ, অরুণা চৌধুরী, জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. এম এম রুহুল আমিন, নগর সভাপতি এইচ এম শাহাদাৎ, শেখ আব্দুল হান্নান, যুব ইউনিয়নের জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত মুখার্জি, ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সভাপতি উত্তম রায় প্রমুখ। নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাসদ জেলা সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত নাণ্টু, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক তপন রায়, ইউসিএলবি নেতা মোস্তফা খালিদ খসরু, আনিছুর রহমান মিঠু, সিপিবি বাগেরহাট জেলা সাধারণ সম্পাদক ফররুখ হাসান জুয়েল, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নূর আলম শেখ, সিপিবি নেতা সুতপা বেদজ্ঞ, এড. চিত্তরঞ্জন গোলদার, অশোক সরকার, কিশোর রায়, এড. নিত্যানন্দ ঢালী, পূর্ণেন্দু দে বুবাই, নিতাই পাল, রুস্তম আলী হাওলাদার, দ্বীন মোহাম্মদ, মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, আব্দুল হালিম, রহমান মোল্লা, এড. প্রশান্ত মন্ডল, বাবু মন্মথ প্রমুখ। জনসভা শেষে নগরীতে বিশাল এক লাল পতাকার বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এর পূর্বে সকালে ডিসি অফিসের সামনে প্রয়াত নেতার শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, টিইউসি, উদীচী, রতন সেন পাবলিক লাইব্রেরী, খেলাঘর আসর, কৃষক সমিতি, ক্ষেতমজুর সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।