শাহজাহান সিরাজ :: উপকুলীয় জনপদ খুলনার কয়রায় প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক ব্রিশাঙ্ক সানা। স্থানীয় বাজারে এই তরমুজের বিশাল চাহিদা থাকায় এলাকার কৃষকদের মধ্যে এ নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখা দিয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সরেজমিন গবেষণা বিভাগ দৌলতপুর খুলনার সহযোগিতায় এবং গোপালগঞ্জ জেলায় কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের অর্থায়নে। আমাদী নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়াউর রহমান জুয়েল বলেন, এই এলাকার কৃষকরা আগামীতে বর্ষা মৌসুমে তরমুজ চাষ করার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে ব্যাপক এলাকা জুড়ে এর চাষাবাদ করা সম্ভব হবে। কয়রার প্রথম অসময়ের তরমুজ চাষী কৃষক ব্রিশাঙ্ক সানা বলেন, ২০২১ সালের মে মাসের ১ম সপ্তাহে তরমুজের বীজ রোপণ করি। বীজ লাগানোর ১ মাস পর থেকে চারা মাচায় উঠে। এর কিছুদিন পর থেকে ফুল ফল দেখা দেয়। আড়াই থেকে তিন মাসের ভিতরে তরমুুজ বিক্রয় করা শুরু করি। প্রতিটি তরমুজ ৪ থেকে ৬ কেজি ওজন হয়েছে, প্রতি কেজি তরমুজ ৭০ টাকা বিক্রয় করতে পারছি। স্থানীয় বাজারে অসময়ের তরমুজের বেশ চাহিদা রয়েছে। সরেজমিন গবেষনার বৈজ্ঞানিক সহকারী মোঃ জাহিদ হাসান বলেন, প্রত্যন্ত এ জনপদে পরীক্ষামূলক ভাবে এই বছর অফসিজন তরমুজ চাষ শুরু করেছে। এতে করে তরমুজ চাষে সফল হয়েছে এই কৃষক। তিনি আরও বলেন, তরমুজ চাষ করতে গেলে উচু জমির দরকার হয়। ঘেরের আইলে তরমুজের বীজ রোপণ করে মাচা তৈরী করে দিলে কয়রায় তরমুজ চাষের অনেক সম্ভাবনা আছে। আগমীতে অনেকেই অসময়ে তরমুজ চাষ করার ব্যাপারে অনেক আগ্রহ দেখাচ্ছে। এসময় সরেজমিনে ক্ষেতে বৈজ্ঞানিক সহকারি জাহিদ হাসানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অসময়ে তরমুজ চাষে কৃষক আগ্রহী হওয়ার কারন হচ্ছে, দুইমাসে তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়ে যায়। কয়রায় আমাদীর মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। সরেজমিন গবেষণা বিভাগ খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ মোঃ হারুনর রশিদ বলেন, বর্ষাকালিন সময়ে তরমুজ চাষ বেশ লাভ জনক হয়ে থাকে। দেশের উর্বর মাটিকে ব্যবহার করে কৃষকরা এ জাতের তরমুজ চাষ করে বেশি লাভবান হবেন। এতে সচল হবে গ্রামীণ অর্থনীতি । চাকরীর পেছনে বৃথা সময় ব্যয় না করে যদি কৃষি কাজে শিক্ষিত তরুনরা এগিয়ে আসেন তাহলে নিজে স্বাবলম্বী হবে এবং দেশের মানুষের চাহিদা মিটাতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে। যদি স্থানীয় বেকার যুবকরা এ কাজে এগিয়ে আসেন তাহলে তারা স্বাবলম্বী হতে পারবে। তার জন্য সরেজমিন গবেষনা বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।