মোহাম্মদ মিলন:: খুলনার বাজারে ঊর্ধ্বমুখি আদা এবং জিরার দাম। কয়েকদিনের মধ্যে এ দু’টি পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। সেই সাথে বেড়েছে চাল, ডাল, পিয়াজ, রসুনসহ বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। আর রমজান মাসকে সামনে রেখে বেড়েই চলেছে ছোলা, মুড়ি ও চিড়ের মূল্য। করোনার কারণে আমদানী ও সরবরাহ কম থাকায় এই মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। ক্রেতারা বলছে, করোনা এবং রমজানকে কেন্দ্র করে পণ্যের দাম বৃদ্ধি ব্যবসায়ীদের একটি কৌশল।
বুধবার নগরীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এর মধ্যে আদার দাম সব থেকে বেশি। প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। আগে এই আদা বিক্রি হয়েছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে জিরা ৪৪০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগে এই জিরা বিক্রি হয়েছে ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকা কেজিতে। বেড়েছে চাল, ডাল, পিয়াজ, রসুন, শুকনো মরিচ, আলুর দামও। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক দোকানী আদা বিক্রি করছেন না।
বড় বাজারে আসা আবু সাঈদ এক ক্রেতা বলেন, আদায় কয়েকদিন আগেও ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে কিনেছি। আর এখন সেই আদায় ৩০০ টাকা কেজিতে কিনলাম। এছাড়া পিয়াজ, রসুনসহ নিত্য পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ করোনায় নয়, না খেয়ে মরবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রফিকুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, চাল, ডালের পাশাপাশি ছোলার দামও বেড়ে গেছে। রমজান মাস আসলেই ব্যবসায়ীরা কৌশলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।
গতকাল বড় বাজারে মিনিকেট চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি বালাম টাল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকায় আর স্বর্ণা চাল ৪০-৪১ টাকা কেজি দরে।
বড় বাজারের মেসার্স এনসিডি বাণিজ্য ভান্ডারের চাল ব্যবসায়ী মধুসূধন দাস বলেন, ধাপে ধাপে চালের দাম বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ১ থেকে ২ টাকা চালের দাম বেড়েছে। মিলারদের কাছে চাল নেই। যে কারণে চালের দাম বেড়েছে।
বড় বাজারের ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন জানান, মসূর ডাল (মোটা) ৮৫ থেকে ৮৭ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা কেজিতে। জিরা ৪৪০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। যা আগে বিক্রি করেছি ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকা দরে। এছাড়া কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে খেসারী ও মুগ ডালের।
একই বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রব বলেন, পূর্বের কিছু আদা ছিলো যা আজ ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। বেড়েছে শুকনো মরিচের দামও। শুকনো মরিচ ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ২৫০ টাকা কেজি। ছোলা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা দরে। যা আগে ছিলো ৮০ টাকা। রসুন ১০০ টাকা থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। আদার দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে এই কারণে তিনি জানান, পাইকাররা বলছেন, আদার আমদানি নাই। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম। এছাড়া পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। প্রতিদিনই পণ্যের দাম বাড়ছে।
খালিশপুরের ব্যবসায়ী মোঃ মাসুদ আসিফ বলেন, আদার দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। আদার দাম বাড়ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল কেজি প্রতি প্রায় ৫ টাকা বেড়েছে। চিড়ার দাম কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। আর মুড়ির দামও বেড়েছে।
বড় বাজারের দিনাজপুর ভান্ডারের সামনে থাকা খুচরা ব্যবসায়ী মহিত জানান, সাদা ও লাল চিড়া ৬০ থেকে ৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।