২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে আগামীকাল শনিবার (৩০ জানুয়ারি)। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ফল প্রকাশ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে সংসদে পাস হওয়া তিনটি সংশোধিত আইনের গেজেট প্রকাশের পর ফল প্রকাশ হতে যাচ্ছে।
গত ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সম্মতির পর ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট-২০২১’ ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’ সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে রবিবার (২৪ জানুয়ারি) সংসদে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিল তিনটি উত্থাপন করেন। সেগুলো সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে পাস হয়। এরপরই সেগুলো আইনে পরিণত করতে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছিল। বিলটি পাসের শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এখন প্রজ্ঞাপন করতে দুইদিন সময় লাগবে। এরপরই দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
বিলের বিস্তারিত
“প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতে অতিমারী, মহামারী, দৈব দুর্বিপাকের কারণে বা সরকার কর্তৃকসময় সময় নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করে উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশাবলি জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।”
চলতি বছরের প্রথম অধিবেশন শুরুর দ্বিতীয় দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে বিল তিনটি পাঠানো হয়। সেদিন (১৯ জানুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে এই বিল উত্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি।
আগের আইনে পরীক্ষা নেয়ার পর ফলাফল প্রকাশের বিধি থাকলেও করোনাকালীন মহামারিতে বিশেষ বিবেচনায় তাতে সংশোধন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। সব সংসদ সদস্যের হ্যাঁ সূচক সমর্থনে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। এরপর ২১ জানুয়ারি বিল তিনটি স্থায়ী কমিটির যাচাই-বাছাই শেষে সংসদে জমা দেয়া হয়।
এর আগে, গত ১৯ জানুয়ারি ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিল-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’, সংসদে উত্থাপন করেন।
পরে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিলটি একদিনের মধ্যে এবং বাকি দুটি দুদিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
এর আগে ১১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, সংসদের আসন্ন অধিবেশনে শুরুর দিকেই আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ ২৮ জানুয়ারির মধ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীর ফল প্রকাশ করা হবে।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনাভাইসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর সেই লক্ষ্যে বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশ করতে আইন সংশোধনের প্রস্তাবে সম্মতি দেয় মন্ত্রিসভা।