এমবিবিএস ডিগ্রি নেই। পাস করেছেন এইচএসসি। ডাক্তার পদবি ব্যবহার করে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে দিচ্ছেন চোখের চিকিৎসা। এমনই এক ভুয়া চক্ষু বিশেষজ্ঞের সন্ধান মিলেছে নাটোরের বাগাতিপাড়ায়।
শুক্রবার র্যাবের অভিযানে উপজেলার দয়ারামপুর বাজার থেকে আশরাফুল ইসলাম নামের ভুয়া চিকিৎসককে আটকের পর কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
র্যাব ও স্থানীয়রা জানান, আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়রামপুর বাজারে রোগী দেখেন। এইচএসসি পাস করে তিনি ডাক্তার পদবি ব্যবহার করে সেখানে মানুষের চোখের চিকিৎসা দেন। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে ওই বাজারে তিনি এ কাজটি করছেন।
বাজারের ‘কেয়া চশমা ঘর’ নামের একটি দোকানে বসে তিনি তার কর্মযজ্ঞ চালান। সেখানে সাইনবোর্ডে তিনি নামের আগে ডা. পদবি ব্যবহার করেন এবং নাটোর জেলার গুরুদাসপুর চক্ষু হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ইনচার্জ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বিষয়টি র্যাবের নজরে এলে শুক্রবার র্যাব-৫ এর সিপিসি-২ এর এএসপি মাসুদ পারভেজের নেতৃত্বে ওই বাজারে এক অভিযান পরিচালনা করেন। সেখানে কেয়া চশমা ঘর থেকে আশরাফুল ইসলামকে আটক করা হয়।
একই সঙ্গে কেয়া চশমা ঘরের স্বত্বাধিকারী আক্কাস আলীকেও আটক করে র্যাব। আটকের পর তাদের সেখানে পরিচালিত র্যাবের এক ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে এমবিবিএস না হয়েও ডাক্তার পদবি ব্যবহার এবং ১৩ বছর ধরে ব্যবস্থাপত্রসহ চোখের চিকিৎসা দেয়ার দায়ে আশরাফুল ইসলামকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়াও এমবিবিএস ডিগ্রিধারী না হওয়ার বিষয়টি জেনেও দোকানের বিক্রি ও ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ভুয়া চিকিৎসককে দোকানে বসিয়ে চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার অপরাধে চশমা ঘরের স্বত্বাধিকারী আক্কাস আলীকে ৭৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবে আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে বলেন, তিনি এইচএসসি পাসের পর এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান বলেন, মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ অনুযায়ী ভুয়া ডাক্তার আশরাফুল ইসলামকে এবং ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ অনুযায়ী চশমার দোকান মালিককে সাজা দেয়া হয়েছে।