সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
একজন নিখাদ দেশপ্রেমিক ​শেখ আব্দুল করিম | চ্যানেল খুলনা

একজন নিখাদ দেশপ্রেমিক ​শেখ আব্দুল করিম

বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে রয়েছে লাখো মানুষের আত্মত্যাগ। ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে তিন মিলিয়ন শহীদের আত্মদান, লাখো বীরের রক্ত আর অপরিসীম আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আজকের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। শেখ আব্দুল করিম সেই বীরদের একজন; ২৩ বছরের আন্দোলন, সংগ্রাম আর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে যার রয়েছে অপরিসীম আত্মত্যাগের সমৃদ্ধ ইতিহাস। শেখ আব্দুল করিমের জন্ম ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে খুলনার ছোট বয়রার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তার পিতার নাম শেখ ছমির উদ্দীন এবং মাতার নাম সবুরন্নেছা। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্বাধীনচেতা।

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ আব্দুল করিম ব্রিটিশ শাসনকে মেনে নিতে পারেননি। আন্দোলন সংগ্রামের এক পর্যায়ে ধর্মের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র্রের সৃষ্টি হলে স্বপ্ন দেখেন শোষণহীন সাম্যতা ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার। পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের শুরু থেকেই পাকিস্তানি শাসকদের অপশাসন তাকে ভাবাতে থাকে। এমন সময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং আবুল হাশিম এর দিকনির্দেশনায় মাওলানা ভাসানি, শামসুল হক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের ২৩ শে জুন প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায়, বৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে রাজপথে নামে নবপ্রতিষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগ। অধিকার বঞ্চিত মানুষ দলে দলে যোগ দিতে থাকে সংগঠনটিতে। দ্রুতই সারা পূর্ব পাকিস্তানে দলটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বাংলা ভাষার দাবিতে, খাদ্য দূর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে আওয়ামী মুসলিম লীগের নেতৃত্বে মানুষ সরব হয়ে ওঠে।

তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনটির বিস্তারের লক্ষ্যে বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় কমিটি গঠন করা হয়। খুলনায় বঙ্গবন্ধু নিজে এসে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শেখ আব্দুল আজিজকে সভাপতি এবং এ্যাডঃ মমিনউদ্দীন আহমদকে সাধারন সম্পাদক করে জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করেন। নতুন এই সংগঠনটির কর্মকান্ডে শেখ আব্দুল করিম আকৃষ্ট হন। এ্যাডঃ মমিন এবং শেখ আব্দুল করিম দু’জনই ছিলেন ছোট বয়রার অধিবাসী। তাদের মধ্যে ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ফলে আব্দুল করিম জেলা আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই সংগঠনটির সাথে সম্পৃক্ত হন। ছোট বয়রা তখন ছিল মহম্মদনগর ইউনিয়নের অন্তর্গত। পরবর্তীতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি হলে তিনি মহম্মদনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন। বয়রা, মহম্মদনগর এলাকায় তিনি আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করেন। ৫০’র দশকের মধ্যভাগে তার আহবানে সাড়া দিয়ে​ আওয়ামীলীগের সদস্য হন শেখ আব্দুল গফফার ওরফে নেতা গফফার। ১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ছোট ভাই শেখ আবু নাসের এর নূরনগরস্থ বাসায় খুলনার সকল গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের উপস্থিতিতে তাকে আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন শেখ আব্দুল করিম।

১৯৬৪ সালের ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলনের কিছুদিন পূর্বে আব্দুল করিম অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তিনি আব্দুল গফফারকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেন। ৬৪ সালের ঐ সম্মেলনে শেখ আব্দুল গফফার সভাপতি নির্বাচিত হন। ৭০’র নির্বাচনের পূর্বে শেখ আব্দুল করিম পুনরায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ৭০’র নির্বাচনে​ বিপুল বিজয়ের পর প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান কর্তৃক ক্ষমতা হস্তান্তরে অব্যাহত টালবাহানার প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ২৬ শে মার্চ সকালেই খুলনা শহর স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সভাপতি মির্জা খয়বার হোসেনের নেতৃত্বে বয়রা সার্কিট হাউজ মাঠে করনীয় নির্ধারনে আলোচনায় মিলিত হন শেখ আব্দুল করিম এবং শেখ দবিরুল ইসলাম সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা যাতে যশোর থেকে খুলনায় প্রবেশ করতে না পারেন এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ঐদিনই বয়রার বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে ব্যারিকেড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেদিন বয়রা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের সামনের কালভার্টটি ভেঙে ফেলা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন মির্জা খয়বার হোসেন সহ আওয়ামীলীগ নেতা শেখ আব্দুল করিম, মির্জা আফজাল হোসেন, শেখ হিসাম উদ্দীন, শেখ দবিরুল ইসলাম, শেখ আব্দুল গফফার এবং মোল্লা আবু জাফর জফা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

২৭ শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে খুলনার প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ তাদের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়। ২৭ শে মার্চের পর তারা আর এলাকায় থাকতে পারেন নি। কারন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিতে এক পর্যায়ে সবাই চলে যান ভারতে। একেকজন একেক ক্যাম্পে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। শেখ আব্দুল করিম তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ হাসান সরোয়ার, মেজ পুত্র শেখ হাসান আমীর, ভাতিজা শেখ দেলোয়ার হোসেন, শেখ মোঃ শাহজাহান প্রমুখ কে সাথে নিয়ে ৩ রা এপ্রিল অসুস্থ অবস্থায় ভারত যান। কয়েকদিন পর তার সেজ পুত্র শেখ হাসান আবু জাফর ঝন্টু একা চলে যান ভারতে। তার আরেক ভাতিজা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ এবং শেখ ইসহাক আহমেদ ও মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিতে ভারত যান। ৯ নং সেক্টরের অধীন টাকী ক্যাম্প গড়ে তোলার শুরু থেকেই এর সাথে যুক্ত হন তিনি। ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার শুরুতে অনেকদিন ক্যাম্প ইনচার্জ ছিলেন। পরবর্তীতে ক্যাশিয়ার​ কাম সুপারভাইজারের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন। তার মেজ পুত্র শেখ হাসান আমীর এবং ভাতিজা দেলোয়ার ও শাহজাহান সপ্তাহ দুয়েক পর দেশে ফিরে আসলেও অন্যরা প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ভারতে থেকে যান।

খুলনার মুক্তিযুদ্ধে তার পরিবারের ভূমিকার কথা সকলের জানা। তার মালিকানাধীন খুলনা বড় বাজারের ১০ নং ক্লে রোডের ‘হাসান স্টোর’- এ বসে আওয়ামীলীগের অনেক সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালিত হত। এ কারনে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দোকানটি একাধিকবার পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দোসরদের দ্বারা লুট হয়। তার ভাতিজা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ছিলেন একজন দূর্ধর্ষ সম্মুখ যোদ্ধা। টাকি যুব অভ্যর্থনা ও তেতরা/ভ্যাবলা ক্যাম্প হয়ে ভারতের সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত বিহারের চাকুলিয়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেওয়া শেখ ওয়াদুদ অনেক সম্মুখ যুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার। তিনি ডুমুরিয়ার রানাই প্রাথমিক বিদ্যালয় রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ এবং বটিয়াঘাটা থানা আক্রমণে অসীম সাহসিকতার সাথে নেতৃত্ব দেন। খুলনা বেতার কেন্দ্র প্রতিরোধ যুদ্ধের ও একজন সাহসী সম্মুখযোদ্ধা ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর খুলনা সফরের সময় মুসলিম লীগের ঘাঁটি খুলনায় তার নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তার নিরাপত্তার জন্য যে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়েছিল সেই টিমের অন্যতম সদস্য ছিলেন শেখ আব্দুল ওয়াদুদ।

শেখ আব্দুল করিমের আরেক ভাতিজা শেখ দেলোয়ার হোসেন ও ছিলেন খুলনায় বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা টিমের আরেক সদস্য। দুই পুত্র শেখ হাসান সরোয়ার এবং শেখ হাসান আবু জাফর ঝন্টু ও ছিলেন সাহসী সম্মুখ যোদ্ধা। খুলনা মুক্ত হওয়ার ঠিক এক বা দু’দিন পূর্বে খুলনা বেতার কেন্দ্র দখলের জন্য যে পরিকল্পিত আক্রমণ চালানো হয়েছিল সেই আক্রমণের একজন সাহসী সম্মুখযোদ্ধা ছিলেন শেখ হাসান আবু জাফর ঝন্টু। ১৭ ই ডিসেম্বর খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে বয়সের ভারে অসুস্থ অবস্থায় অনেকটাই ঘরবন্দী জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। তার পরিবারের আরেক সদস্য শেখ ইসহাক আহমেদ ও আরেকজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন। তিনি বয়সে অনেক তরুণ ছিলেন। এ কারনে বঙ্গবন্ধু তাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন।

টানা ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর অসহায় আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে ১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু ১০ ই মার্চ তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশ পূনর্গঠনের কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। এই কর্মযজ্ঞের নিষ্ঠাবান, নির্লোভ এবং আদর্শিক কর্মবীর ছিলেন শেখ আব্দুল করিম। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ৭২-৭৪ দু’বছর সততা ও নিষ্ঠার সাথে রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। খুলনা পৌরসভা, খুলনা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের তিনবার কমিশনার নির্বাচিত হয়ে দীর্ঘ এক যুগের ও বেশি সময় সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তৎকালীন মহম্মদনগর ইউনিয়ন এবং বর্তমান ১৬ নং ওয়ার্ডের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সূচনা তার হাত ধরে। জনপ্রতিনিধি থাকাকালীন তিনি অনেক বেকার, অসহায় যুবকের চাকরির ব্যবস্থা করেন। এলাকার উন্নয়নে তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ এলাকাবাসীর উদ্যোগে তার নামে ‘করিম নগর’ এলাকার নামকরন করা হয়। ১৯৯৯ সালে আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তীতে খুলনা বিভাগীয় সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির উদ্যোগে এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সুবর্ণজয়ন্তীর ঐ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে শেখ আব্দুল করিমের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। একজন সৎ এবং সজ্জন জনপ্রতিনিধি এবং নেতা হিসেবে এখনো তার খ্যাতি রয়েছে।

৭৫ এর ১৫ই আগষ্টের নির্মম ট্রাজেডির পর মুক্তিযুদ্ধ ও আওয়ামীলীগের স্থানীয় সংগঠক শেখ আব্দুল করিম এবং তার পরিবারের সদস্যদের উপর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা চালায় অত্যাচার, নির্যাতনের স্টীম রোলার। বন্দি করা হয় শেখ আব্দুল করিম এবং তার তিন পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হাসান আবু জাফর ঝন্টু, শেখ হাসান আক্তার বুলু এবং শেখ হাসান বখতিয়ার বাকু কে। তাদের নামে দেওয়া হয় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। এই মামলায় তার ভাতিজা শেখ দেলোয়ার হোসেন, শেখ মোঃ শাহজাহান, শেখ মোঃ আলাউদ্দীন, শেখ ইসহাক আহমেদ এবং জিয়াউর রহমান বাবু সাহেব সহ আরো অনেককে আসামি করা হয়েছিল। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনড় থাকার কারনে সেদিন মোকাবিলা করতে হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা সহ অসংখ্য মামলা। দীর্ঘদিন থাকতে হয়েছে কারাগারে। শেখ আব্দুল করিমের তিন পুত্র প্রায় ২৩ দিন পর বন্দীদশা থেকে মুক্তি পান। তাদের পরিবারের অনেক সদস্য দীর্ঘ বছর রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমাতে পারেন নি। বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামীলীগের নাম উচ্চারণ ছিল অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ। চারিদিকে তখন এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি। আওয়ামীলীগের অধিকাংশ এমপি এবং নীতিনির্ধারক তখন কারাগারে। সারাদেশটাই যেন এক বন্দীশালা! এমনি এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও শেখ আব্দুল করিমের পরিবার চরম প্রতিকূলতাকে দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করে আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করেছেন।

আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পদক্ষেপে, স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্র পূনর্গঠনে এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী অবৈধ সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং তার পরিবারের সদস্যরা। ৭৫’র ১৫ ই আগস্ট পরবর্তী চরম দুঃসময়ে অনেকে জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা, মামলার ভয়ে অথবা সুযোগ-সুবিধার লোভে বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তবে শেখ আব্দুল করিমের পরিবার মুজিববাদে ছিলেন অটল, অবিচল। বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন শেখ আব্দুল করিম পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চিরকালের জন্য পরপারে চলে গেছেন ২০০৬ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর। রেখে গেছেন এক ঝাঁক দেশপ্রেমিক আদর্শিক মুজিববাদী বিশুদ্ধ রক্তের উত্তরসুরীকে। যারা তার দেখানো পথে শত বাঁধা বিপত্তি মোকাবিলা করে যুগ যুগ ধরে মুজিব আদর্শের ঝান্ডা ধরে রেখেছেন। সময়ের বিবর্তনে তার এবং তার পরিবারের অবদান আমরা ভুলে গেছি। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই​ জানেনা খুলনার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এই সূর্য সন্তান সম্পর্কে, তার সংগ্রামী জীবন এবং দেশপ্রেম সম্পর্কে। রাষ্ট্রের কাছে দাবি মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক সংগঠক এবং সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়া সাহসী বীর শেখ আব্দুল করিমের সংগ্রামী জীবন ও কর্মকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ একটি সাহসী ও আদর্শিক নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধ ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের এই সংগঠকের বীরত্বগাঁথা বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।

মোঃ নজরুল ইসলাম, তরুণ কলাম লেখক

https://channelkhulna.tv/

খোলামত আরও সংবাদ

বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রয়াত শেখ মনিরুল ইসলাম মনি বেঁচে থাকুক আমাদের মনিকোঠায়

জীবনসংগ্রামে সফল এক সাহসি নারী বেগম রাজিয়া নাসের

‘‘বেগম রাজিয়া নাসের” দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের আওয়ামী লীগের প্রাণ

“বিনয়, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত যুবনেতা শেখ সুজন”

বয়লার মুরগি এখন স্কীকৃত নিম্ন আয়ের মানুষের খাবার

“বিএনপির হাতে হারিকেন, দেখে হাসে জনগণ”

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
উপদেষ্টা সম্পাদক: এস এম নুর হাসান জনি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: শেখ মশিউর রহমান
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
ঢাকা অফিসঃ ৬৬৪/এ, খিলগাও, ঢাকা-১২১৯।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির জন্য আবেদিত।