চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ লাশের পাশে পড়ে থাকা এক টুকরো কাপড়ের মাধ্যমে উদ্ধার করা অজ্ঞাত কিশোরীর গলিত লাশের পরিচয় পেয়েছে পুুুলিশ। কাপড়টি পাবার পর থেকেই তৎপর হয়ে উঠে পুলিশ। এরপর বের হয়ে আসে লাশের পরিচয়। অজ্ঞাত ওই কিশোরীর নাম জান্নাতুল জেবা (১৪)। তার বাড়ি ঢাকার যাত্রাড়ীর কোনাপাড়া এলাকায়। সে স্থানীয় একটি স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো।
বুধবার অজ্ঞাত পরিচয় লাশের পরিচয় পেয়ে সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য জানিয়েছিলেন মামলার তদন্তকারী অফিসার সোনারগাঁও থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ। এরআগে গত ৪ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের পিয়ার নগর এলাকার ঝোপ থেকে অজ্ঞাত কিশোরীর গলিত লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গলিত হাত, পা ও মাথাবিহীন কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
সোনারগাঁও থানা পুলিশের এসআই আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে জানান, গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় এলাকাবাসীর সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের পিয়ার নগর এলাকার একটি ঝোপের ভেতর থেকে অজ্ঞাত নারীর হাত, পা ও মাথাবিহীন গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর লাশের পাশে থাকা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়। লাশ উদ্ধারের সময় কিশোরীর গায়ে পরিহিত জামা-কাপড়ের টুকরো ও জুতা নিয়ে দেশের বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করা হয় কোথাও নিখোঁজের জিডি ও অভিযোগ দায়ের হয়েছে কীনা? খুঁজতে গিয়ে জানতে পারি ঢাকার ডেমরা থানায় এক স্কুলছাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। সেই সূত্র ধরে লাশের জামা কাপড় ও জুতা নিয়ে নিখোঁজ মেয়ের বাসায় গেলে তার বাবা-মা মেয়ের উদ্ধার করা জামা কাপড় ও জুতা দেখে চিনতে পারে এবং সে তাদের নিখোঁজ মেয়ে বলে জানায়। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার চরমানিকদা গ্রামে। তার বাবার নাম দিদার। তারা ঢাকার ডেমরা কোনাপাড়া এলাকায় জনৈক মোশাররফের বাড়ির ভাড়াটিয়া। জান্নাতুল জেবা ঢাকার ডেমরা কোনাপাড়া এলাকার মান্নান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৮ম অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
তিনি আরও জানান, জান্নাতুল জেবার ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার সময় নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় তার বাবা ডেমরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন। আমরা জেবার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি সে কেন বাসা হতে বের হলো এবং কার ডাকে বের হলো? এমনকি তাদের কোনো শত্রু আছে কীনা সব কিছু তথ্য নিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য কাজ করছি। এছাড়াও হত্যকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে লাশের পরিচয় পাওয়ার পর নিহত জেবার মা ছুটে আসে সোনারগাঁও থানায়। সেখানে নিহতের মা মানছুরা বেগম বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে কে বা কাহারা আমার মেয়েকে ফুঁসলিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আমরা আমাদের মেয়েকে পাইনি। পুলিশের মাধ্যমে মঙ্গলবার রাতে জানতে পাই কে বা কাহারা আমার মেয়েকে সোনারগাঁয়ে নিয়ে এসে হত্যা করেছে, আমি এর ন্যায় বিচার চাই, আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, অজ্ঞাত ওই কিশোরীর লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আবুল কালাম আজাদ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অজ্ঞাত নারীর পরিচয় পায় এবং নিহতের স্বজনদের খুঁজে বের করে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে এবং ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে।