দেশে বন্যার জন্য সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতিকে দায়ী করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, তিস্তার চুক্তির কথা ফলাও এই সরকার প্রচার করলেও গত এক দশকে সে চুক্তি করতে সক্ষম হয়নি। উজানে ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে নদী অববাহিকার মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে।
সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষকে আশা দিয়ে এক দশকেও সরকার তিস্তাচুক্তি করতে পারেনি। অথচ একের পর এক ট্রানজিট, বন্দর ব্যবহার, বিদ্যুৎ ক্রয়সহ অসংখ্য অসম চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সীমান্তে প্রায় প্রতিদিন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করছে। সে ব্যাপারেও সরকার কোনো কার্যকর প্রতিবাদ জানাতে সাহস পায়নি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারত অভিন্ন নদীগুলোর বাঁধ-ব্যারাজের গেট খুলে দেয়ায় উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে বাংলাদেশের ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, মহানন্দ, পদ্মা, তিস্তা ও ধরলা নদীর অববাহিকায় ৩৪ জেলা ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে।
তিনি বলেন, কয়েকটি জেলায় এক মাসের মধ্যে ২-৩ বার বন্যার পানি উজান থেকে এসে বাড়িঘর, ফসলের ক্ষেত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
‘ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদী ১৫৪। একমাত্র পদ্মার ফারাক্কা বাঁধ ব্যতীত কোনটারই কোনো পানি বণ্টন চুক্তি ভারতের অনীহার কারণে সম্পূর্ণ হয়নি’।
দেশের বন্যা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, একদিকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের চরম ব্যর্থতা মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে তুলেছে। অন্যদিকে উজানে ভারত থেকে বন্যার পানি নেমে আসায় সম্পদহানি, বাড়িঘর ভেঙে যাওয়া, গবাদি পশুর মৃত্যু, ফসলহানি দেশের মানুষকে সীমাহীন কষ্ট ও অর্থনৈতিক অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলেছে।
‘এই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে প্রায় প্রতি বছর দেশের নদী অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষেরা এই বন্যায় আক্রান্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্বায়ক করে ৪০ সদস্যের একটি জাতীয় ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা অবিলম্বে কাজ শুরু করবেন।