অনলাইন ডেস্কঃএডিস মশা নাকি রোহিঙ্গাদের মতো’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কত বড় অমানবিক হলে, কত বড় অমানুষ হলে এই ধরনের কথা একজন মন্ত্রীর মুখ দিয়ে আমরা শুনতে পাই। মশার যে ওষুধ, এক তো মশার ওষুধই নাই, কার্যকর হচ্ছে না। হবে কোত্থেকে যে দুর্নীতি তারা করে তাতে তো মশার ওষুধ কার্যকর হওয়ার কথা না।রবিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।এডিস মশা নিধনে যে নতুন ওষুধ আনবে সেখানে আরও দুর্নীতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে দুটো ওষুধ একেবারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে থাইল্যান্ডে, সেই দুটো ওষুধ নাকি আনা হচ্ছে। ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছেন গোটা দেশের মানুষ। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে মহামারি আকার ধারণ করেছে প্রাণঘাতী এ রোগ।সংসদ ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যারা ভোটে নির্বাচিত হয়নি, গায়ের জোরে বন্দুকের জোরে যারা বসে আছেন তাদের কাছে পরিষ্কার করে বলতে চাই, সময় শেষ হওয়ার আগেই এই সংসদ বাতিল করুন। এই নির্বাচন বাতিল করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এ দেশের জনগণ জানে কীভাবে এই ধরনের সরকারকে কীভাবে পরাজিত করতে হয়।বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, দেশে কঠিন অবস্থার মধ্যে আমরা বাস করছি। ৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যে গণতান্ত্রিক সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলাম সে স্বপ্নটা পুরোপুরি ভেঙে দিয়েছে। ৯০ সালে পুনরায় হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলাম সেটাকেও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন একটি ভয়াবহ রকমের দানবীয় শক্তি যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা আমাদের ওপরে চেপে বসেছে।তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ন্যূনতম ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। বিচার ব্যবস্থাকে পুরোপুরিভাবে এই অপশক্তি নিয়ন্ত্রণ করছে। এক এগারোর মূল মিশনটাই ছিল বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকীকরণ করা। এখানে কোনো রাজনীতি থাকবে না, রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আওয়ামী লীগের সরকার সেটা বাস্তবায়ন করছে। আজকে এ দেশে কোনো রাজনীতি নেই।১৯৭৫ সালে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে সব রাজনৈতিক দলকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেছিল। আজকে ভিন্ন আঙ্গিকে একদলীয় শাসন বাস্তবায়ন করেছে- যোগ করেন ফখরুল।দলের নেতাকমীদের উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, পৃথিবীতে কোনো স্বৈরাচারী সরকারই দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে পারেনি, আওয়ামী লীগও পারেনি। এবারও পারবে না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। হতাশা কাটিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এদের পরাজিত করতে হবে।ড্যাবের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস- চেয়ারম্যান ও ড্যাবের সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দীন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।