করোনা ভাইরাস(কভিড-১৯) পুরো পৃথিবী জুড়েই এক ভয়াবহ ছোবল দিয়ে চলছে অনবরত; যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশেও দিনদিন করোনার সংক্রমন ও মৃত্যের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোঃমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার কম হলেও তা কখনও কাম্য নয়। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি অনেকটাই করোনায় আক্রান্ত। বাংলাদেশে দিনদিন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। ইউরোপ ও আমেরিকার কিছু দেশের তুলনায় কিছুটা কম হলেও এটি বেশ শঙ্কার। তাই এখনই দরকার পুরো দেশ জুড়ে কঠোর লকডাউন। জোন ভাগ করে লকডাউন দিলে সেটি তেমন একটি কার্যকর হবেনা। কারণ অনেক রেড জোনের লোক রয়েছেন যার কর্মস্থল গ্রীণ জোনে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় এমনটাও হতে পারে যে পুরো দেশটিই রেডজোন! তাই আগেভাগেই পুরো দেশব্যাপী লকডাউন দেওয়া জরুরি।।
যদিও পুরো দেশ লকডাউন দিলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবিকার সমস্যা হবে। তাই পূর্ব প্রস্ততি জরুরি। আগে থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা স্বেচ্ছাসেবক বাহীনি গঠন করে এইসব অসহায় মানুষের তালিকা করতে হবে এবং তাদের একমাসের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল কিছু পৌছে দিতে হবে ঘরে ঘরে। এছাড়া কিছু কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা খোলা রাখা যেতে পারে, তবে তাদের নিজস্ব পরিবহন থাকতে হবে এবং অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। দরকার হলে জরুরি কাজে নিয়োজিত অনেক সদস্য পিপিই পরবেন এটি বাধ্যবাধকতা করা উচিত। দেশকে ও দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য অন্তত ৩০ দিন লকডাউন দেওয়া জরুরি। এখানে লকডাউন বলতে কারফিউ হলেও ভালো হয়। কারণ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ সচেতন নয়। এদেরকে কথা বলে সচেতন করা যাবেনা, তাই পুরো ৩০ দিন জুড়ে সারাদেশে কঠোর লকডাউন দেওয়া জরুরি। এতে করে অনেকাংশেই লাঘব হবে করোনা ভাইরাস ইনশাআল্লাহ। এছাড়া লকডাউনকালে দেশ কিভাবে চলবে পূর্বেই তার একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা করতে হবে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত বা যৌথ উদ্যোগে।।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানব মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যখন কোনো অঞ্চলে মহামারি দেখা দিবে, তখন সেই অঞ্চল থেকে কেউ অন্য অঞ্চলে বাহির হবেনা এবং সেই অঞ্চলে কেউ প্রবেশও করবেনা। তাই মহানবীর বানী অনুসারেও মহামারীর এই কালে কঠোর লকডাউন দেওয়া জরুরি পুরো দেশজুড়ে, যাতে কেউ এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় না যেতে পারে। ঢিলেঢালা লকডাউন দিলে সেটি উভয় দিক দিয়েই ক্ষতিকর হবে। একদিকে অনেকের কাজও স্থবির হয়ে পরবে, অন্যদিকে সংক্রমনও বাড়তে থাকবে। তাই সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ব থেকেই দিক নির্দেশনা দিতে হবে লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবার জন্য করোনাকালীন নতুন নীতিমালার আলোকে।।
জরুরি কাজে নিয়োজিত, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিক সহ সকলকে লকডাউন কালে নির্দিষ্ট বিধি ঠিক করে দিতে হবে। সকলের নিকট যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইডি কার্ড থাকতে হবে। আইডি কার্ড ব্যতীত কাউকে বাহিরে বা সড়কে বের হতে দেওয়া যাবেনা। যদি আমরা পুরো দেশবাসী মাত্র ১ টি মাস কষ্ট করে ধৈর্য ধরে ঘরে থাকতে পারি তাহলে ইনশাআল্লাহ একমাস পর আশার আলো দেখতে পারি। যদি পুরো দেশজুড়ে একমাস(৩০ দিন) লকডাউন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় তাহলে অনেকাংশেই করোনা সংক্রমন লাঘব হবে বলে মনে করি। পৃথিবী ফিরে আসুক তার আপন গতিতে, লকডাউন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ হোক পুরোপুরি করোনা মুক্ত- সেটাই কামনা করি।।
লেখকঃ- মো. নিজাম গাজী,
বি.এস.এস(অনার্স), রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ(প্রথম শ্রেনী),
ধামরাই সরকারি কলেজ, ঢাকা।
Email:- mdnizamgazi1993@gmail.com