কক্সবাজারে একদিনেই ৬ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। সোমবারের (২৭ এপ্রিল) টেস্টে কক্সবাজারের ৪ উপজেলা ও পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৬ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। এদিন সর্বাধিক ১২২ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনা টেস্ট করা হয়।
এদের মধ্যে কক্সবাজার জেলার উখিয়ায় দুইজন, চকরিয়া, রামু ও মহেশখালীতে একজন করে এবং নাইক্ষ্যংছড়ির একজন রয়েছেন।
এ নিয়ে গত ২৭ দিনে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৯৫৫ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনা টেস্ট হয়েছে। এদের মধ্যে সর্বশেষ একজন চিকিৎসকসহ ২১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়।
এদের মধ্যে কক্সবাজার শহরের দুইজন, মহেশখালীর ৯ জন, টেকনাফের ৪ জন, উখিয়ার দুইজন, চকরিয়ার একজন ও রামুর একজন এবং পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দুইজন রয়েছেন। এছাড়াও কক্সবাজারের প্রথম করোনা রোগীর টেস্ট হয়েছিল ঢাকার আইইডিসিআর ল্যাবে। ওই রোগীসহ কক্সবাজার জেলায় ২০ জন ও নাইক্ষ্যংছড়িতে দুইজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে কক্সবাজারে চকরিয়ার প্রথম রোগী ও নাইক্ষ্যংছড়ির প্রথম রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া, কলেজের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোনিয়া আফরোজ, প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. রুপস পাল ও ক্লিনিক্যাল ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাহজাহান নাজির।
সূত্র মতে, এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে প্রত্যেকেই জেলার বাইরে থেকে এসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই এসেছেন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা। এদের মধ্যে দুইজন মাছ ব্যবসায়ী, একজন আম ব্যবসায়ী, দুইজন তাবলীগফেরত এবং একজন গার্মেন্টস কর্মীও রয়েছেন। তবে টেকনাফের এক নারী চিকিৎসক উপজেলা হাসপাতালে রোগীর সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে সোমবার শনাক্ত হওয়া ৬ জনের ‘কেস হিস্ট্রি’ এখনও পাওয়া যায়নি।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া ও ক্লিনিক্যাল ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাহজাহান নাজির জানান, গত রোববার (২৪ এপ্রিল) কক্সবাজার সদর হাসপাতাল, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরসহ জেলার উপজেলা ও পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ফ্লু সেন্টার থেকে ১২২ জন সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে সোমবার ১২২টি টেস্ট হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। অন্য ১১৬ জনের টেস্ট রিপোর্টই নেগেটিভ।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজার ল্যাবে প্রতিদিন ৯৬ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষার সুযোগ থাকলেও উপজেলা পর্যায় পর্যাপ্ত পরিমাণ নমুনা আসছে না। তবে এখন অনেক বেশি নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। সোমবার একদিনে সর্বাধিক ১২২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
তিনি জানান, সোমবারের ১২২টি নমুনারই পরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবটিকে ঢাকাস্থ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নির্ধারণ করেছে। গত পহেলা এপ্রিল থেকে ল্যাবটি চালু হয়েছে।