কপিলমুনিতে তরমুজ ব্যবসায়ীদের তেলেসমাতিতে ক্রেতা সাধারণকে ঠকানো হচ্ছে। গলাকাটা দাম, ওজনে কারচুপি আর অপরিপক্ক তরমুজ নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে অহরহ চলছে বচসা। বচসা থেকে হাতাহাতিরও ঘটনা ঘটছে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে।
গ্রীষ্মের এই ভয়াবহ দাবাদাহে তৃষ্ণা নিবারনে সুস্বাদু ও সুমিষ্টু এই রসালো ফলের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে কপিলমুনির তরমুজের দোকান গুলোতে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়ছে। তাছাড়া ইফতারে তৃপ্তি মেটাতে ও স্বস্থির জন্য তরমুজকে বেছে নিচ্ছেন রোজাদাররা। এ কারণে এবার তরমুজের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। আর এই সুযোগে তরমুজ ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কাছ থেকে গলাকাটা দামে তরমুজ বিক্রি করে লুপে নিচ্ছেন কাড়ি কাড়ি টাকা। কপিলমুনি বাজারের ধান্য চত্ত্বর জুড়ে তরমুজের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে তরমুজ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কপিলমুনির পার্শ্ববর্তী অঞ্চল দাকোপ, কয়রা, বটিয়াঘাটা, ডুমরিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চলসহ পাইকগাছার দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে তথা খুলনা জেলায় এবার সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৩শ কোটি টাকা। তবে তরমুজের এই বাম্পার ফলন সত্ত্বেও কেন চড়া দামে কিনতে হচ্ছে তরমুজ? এমন প্রশ্ন করেছেন ক্রেতারা। অনুসন্ধানে জানা যায়, কপিলমুনির ব্যবসায়ীরা নিকটবর্তী কয়রা থেকে চাষীদের কাছ থেকে ক্ষেত কিনে তরমুজ আনেন এখানে। যার প্রতি পিচের আনুমানিক গড়মূল্য দাঁড়ায় ৬০-৭০ টাকা। অথচ সেই তরমুজ ওজনভেদে প্রতিটি পিচ বিক্রি করা হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। ১ থেকে ২ কেজি ওজনের দাম নেয়া হচ্ছে ২০-২৫ টাকা, ২-৪ কেজি ওজনের তরমুজ কেজি প্রতি ৩৫-৪০ টাকা। আর ৪ থেকে ৬ কেজি বা তার অধিক ওজনের তরমুজের দাম নেয়া হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকা। কখনো কখনো এই দাম আরও বাড়ানো হচ্ছে।
ওজনে এবং চড়া দামে তরমুজ বিক্রির কারণ জানতে চাইলে স্থানীয় তরমুজ বব্যবসায়ী টিটো মির, হায়বাৎ মীর, রবিউল সরদার, ইসলাম গাজী ও আলমগীর একই সুরে বলেন, পরিবহন খরচ বেশী হওয়ার পাশা পাশি অনেক তরমুজ নষ্ট হয়ে যায় এ করণে দাম বেশী নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া গত ৩ বছর যাবৎ ওজনে বিক্রি শুরু হয়েছে তাই ওজনে বিক্রি করছি। তবে একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, সিন্ডিকেট করে তরমুজ চড়া দামে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা। বিক্রেতারা ক্রেতাদের উপর এবার এমন ভাবে জেঁকে বসেছেন যে, ক্রেতার পছন্দের তরমুজটি তারা নিজ হাতে কেটে দিলেও যদি ফ্যাকাশে বা অপরিপক্ক হয় সেটাও ক্রেতাদের নিতে বাধ্য করে। এ ছাড়া ওজনেও কারচুপি করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে তারা। এ নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে বচসা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। তবে তরমুজ ব্যবসায়ীদের এসব অনৈতিক কর্মকান্ডে বিরুদ্ধে অনেক স্থানে ইতোমধ্যে প্রশাসন মাঠে নেমে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। দেশের বৃহত্তম মোকাম কপিলমুনিতে তরমুজ ব্যবসায়ীদের তেলেসমাতি ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভোক্তা সাধারণরা।