বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের মরদেহ দেশে আসছে বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে। সকাল সাড়ে ৮টায় তার মরদেহবাহী বিমানটি ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
সচিবালয়ে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদেরকে তিনি এ তথ্য দেন। কোন প্রক্রিয়ায় আনা হবে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেটা সহজ হয় সেভাবেই আমরা আনব। যেহেতু রেগুলার ফ্লাইট অপারেট হচ্ছে না। যে অপশন সহজ হয়, সেই অপশন ব্যবহার করে আমরা নিয়ে আসব।’
এদিকে, দোহা থেকে বিমানের ফিরতি একটি ফ্লাইটে নওশাদের মরহেদ আনা হবে বলে জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
জানানো হয়েছে,ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ আনতে সংস্থার ঢাকা-দোহা রুটের পরিকল্পনায় আংশিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বুধবার দোহা থেকে ফিরতি পথে নাগপুর হয়ে ঢাকায় আসবে বিমানের একটি ফ্লাইট। এই ফ্লাইটেই আসবে নওশাদের মরদেহ। সঙ্গে ওই ফ্লাইটে নাগপুরে থাকা তার দুই বোনকেও ফিরিয়ে আনা হবে।
গত ২৭ আগস্ট সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে ১২৪ জন যাত্রীসহ বিজি-০২২ ফ্লাইটটি নিয়ে ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন নওশাদ অসুস্থ বোধ করেন। পরবর্তীতে বিমানটিকে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয়।
আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়ার সাথে সাথেই ক্যাপ্টেন নওশাদ কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান। একই সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন।
কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিমানটিকে তার নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলটই বিমানটিকে অবতরণ করান।
ওই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ১২৪ জন। ওই রাতেই আরেকটি ফ্লাইটে করে আট সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল নাগপুরে যায়। মধ্যরাতের পর বিমানটিকে যাত্রীসহ ঢাকার বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়।
পরে জানা যায়,নওশাদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। নওশাদকে ভর্তি করানো হয় নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে। হাসপাতালে তিন দিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় নওশাদকে।
এরপর সোমবার (৩০ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে তার লাইফ সাপোর্টিট খুলে নেওয়া হয়। এর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো, ওই দিনই চিকিৎসকরা তাদের জানিয়ে দিয়েছিলেন, নওশাদ কাইয়ুমকে বাঁচিয়ে তোলা যায়নি। পরিবারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়।
এর আগে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ঝুঁকিপূর্ণ একটি ফ্লাইট নিরাপদে অবতরণ করিয়ে দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হন পাইলট নওশাদ। বিজি-১২২ ফ্লাইটটিতে যাত্রী ছিলেন ১৪৯ জন, ক্রু ছিলেন ৭ জন এবং কো-পাইলট ছিলেন ২ জন। সেদিনও নওশাদের দক্ষতায় বেঁচে যায় তাদের জীবন।