চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃচার বছর পর বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সোমবার (৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলন ঘিরে সাজ সাজ রব পড়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাগত জানাতে বাগেরহাট শহরসহ সড়ক-মহাসড়কে শতাধিক দৃষ্টিনন্দন তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া দলীয় পতাকা, বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে নবরূপে সাজানো হয়েছে বাগেরহাট শহরকে। সম্মেলন ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে বাড়তি উৎসাহ-উদ্দীপনা। তবে এবারের সম্মেলনে জেলা কমিটিতে ৩৩ ভাগ নারীর অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন নারী নেত্রীরা। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, এই সম্মেলনে এবার তরুণদের পাশাপাশি নারী নেতৃত্বকেও প্রধান্য দেওয়া হবে।
খানজাহান আলী কলেজ মাঠে নৌকার আদলে সোমবারের সম্মেলনে জন্য বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য শ্রী পিযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সম্মানিত অতিথি শেখ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এসএম কামাল হোসেন, শেখ সারহান নাসের তন্ময় সহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
গত ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন ডা. মোজাম্মেল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ কামরুজ্জামান টুকু। ১৯৮১ সাল থেকে দীর্ঘ তিন যুগের অধিক সময় ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসা প্রবীণ নেতা ডা. মোজাম্মেল হোসেন এমপি এবারের সম্মেলনেও কি সভাপতি থাকছেন? এ নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও প্রকাশ্যে দলীয় নেতাকর্মীরা কেউ মুখ খুলেননি।
নেতারা বলছেন, আমরা কেউই পদের জন্য রাজনীতি করি না। বঙ্গবন্ধুর ভাতিজা বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন বাগেরহাট আওয়ামী লীগের অভিভাবক। পাশাপাশি দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করবেন, তাকেই দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সাদরে গ্রহণ করবে।
তবে এবারের সম্মেলনে জেলা কমিটিতে ৩৩ ভাগ নারীর অন্তভুক্তির দাবি জানিয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরিফা খানম। তিনি বলেন, দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে দলের প্রতিটি ইউনিটে নারী সদস্যের সংখ্যা বেড়েছে। আমরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে এবারের বাগেরহাট জেলা কমিটিতে ৩৩ ভাগ নারীর অন্তভুক্তির দাবি জানিয়েছি। এ সময় সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভিনসহ অন্য নারী নেত্রীরাও তার সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করেন। একই ভাবে প্রবীণ ও নবীনদের সমন্বয়ে শক্তি কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন, বাগেরহাট সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগ দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান খান রেজাউল ইসলাম।
এদিকে, রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠানিক মতবিনিময়কালে বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকু বলেন, সোমবার জেলা ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে ৬১২টি ওয়ার্ড, ৫৮টি ইউনিয়ন ও ১০টি উপজেলার সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। এবারের সম্মেলনে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী যোগ দেবেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জেলা কমিটিতে তরুণদের পাশাপাশি নারী নেতৃত্বকেও প্রধান্য দেওয়া হবে। দলের নেতাকর্মীরাও একতাবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি উপহার দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এই নেতা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান, সরদার ফকরুল আলম সাহেব, সাংগঠনিক সম্পাদক নকীব নজিবুল হক নজু, শ্রম সম্পাদক সরদার বদিউজ্জামান, সাংস্কৃতিক সম্পাদব শেখ ইলিয়াস হোসেন, সদস্য নীহার রঞ্জন সাহা ও আব্দুল বাকী তালুকদার প্রমুখ।