চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বনানী অফিসে দুপক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার (১৩ জুলাই) দেড়টার দিকে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী বনানী অফিস থেকে বের হলে হঠাৎ করে সেখানে অবস্থান নেওয়া কিছু নেতাকর্মী তাকে আক্রমণ করেন। তখন চিশতীও প্রতিরোধের চেষ্টা করেন।
এ সময় দলের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, কমিটি গঠনে সিনিয়র জুনিয়র না মানার বিষয় নিয়ে করে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফয়সল চিশতি ও রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার মধ্যে প্রথমে তর্ক-বির্তক, পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
দলটির নেতা-কর্মীরা জানায়, এরশাদের শারীরিক পরিস্থিতি জানাতে বনানীর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের। সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে জি এম কাদের তার কক্ষে গিয়ে বসেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হেসেন বাবলা এমপি, সুনীল শুভরায়, এস এম ফয়সল চিশতী ও রেজাউল ইসলাম ভুইয়াসহ অনেকে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন নেতা জানান, দলটির ভারপ্রপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কক্ষে বসে এমপি বাবলা একটা কাগজ হাতে নিয়ে চোখ বুলাচ্ছিলেন, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফয়সল চিশতী পরে কাগজটি নিয়ে পড়ে দেখেন সেটি একটি বিভাগীয় সাংগঠনিক কমিটির। কমিটিতে সিনিয়র জুনিয়র মানা হয়নি বলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
তখন ফয়সাল চিশতি তখন উচ্চস্বরে বলেন, ‘স্যার হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায়, দেশের মানুষ বন্যায় ভাসছে আর আপনারা বসে বসে পকেট কমিটি করেন।’ একপর্যায়ে তিনি রেজাউল ইসলামকে জিজ্ঞেস করেন, এ কমিটি কে করেছে? জবাবে রেজাউল বলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
এ সময় জি এম কাদেরের সঙ্গে কমিটি গঠন করার বিষয় নিয়ে চিশতি কথা বললে রেজাউল করিম প্রতিবাদ করেন। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি।
এক পর্যায় ক্ষুব্ধ হয়ে ফয়সাল চিশতী রেজাউলের গায়ে হাত তোলেন। এ সময় মহাসচিবসহ অন্য নেতারা তাদের দুজনকে সরিয়ে দেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে পরিস্থিতি এড়াতে জি এম কাদের তার গাড়িতে রেজাউল ইসলামকে নিয়ে যান। এ সময় রেজাউলের অনুসারী কয়েকজন নেতাকর্মী ফয়সল চিশতীকে লক্ষ্য করে গালি দেয়ার চেষ্টা করলে চিশতি নিজেই জাকিরসহ দুজনকে ধরে মারধর করেন।
এ ঘটনায় জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘তেমন কিছু হয়নি। বিভাগীয় সাংগঠনিক সভা ও প্রেসিডিয়ামের সিদ্ধান্ত মতে একটা টিম করা হয়েছে। এটা সাংগঠনিক কমিটি নয়, এটি চূড়ান্ত কোনো কমিটিও নয়।’
কমিটিতে সিনিয়র জুনিয়র মানা হয়নি এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না কমিটিতে এরকম কিছু হয়েছে কি না।’ পরে তিনি বলেন, ‘জুনিয়রের সঙ্গে সিনিয়র থাকতেই পারেন।’
প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভুইয়া জানান, ‘তেমন কিছু ঘটেনি।’ সাংগঠনিক কমিটি নাকি আপনি করেছেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কেন করব? জি এম কাদের ও মসিউর রহমান রাঙ্গা করেছেন।’
এস এম ফয়সল চিশতীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিক কমিটিতে সিনিয়র জুনিয়র না মানায় আমি প্রতিবাদ করেছি।’