একজন পুরুষ যে কিনা নিজের একার পেট চালানোর কথা কিন্তু না, তার মাথায় অনেকের চিন্তা। বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রি-সন্তান আরো অনেক চিন্তা। সেই পুরুষ আজ করোনার কারনে হয়তো আল্লাহ্র ইচ্ছায় ঘরে বন্দী জীবন পাড় করছে। কিন্তু তার মাথায় অনেক চিন্তা আছে। কি করে সংসার চালাবে, কি করে স্ত্রি-সন্তানের মুখে আহার জোগাবে। অথচ এই আমরা নারীরা অনেকটা সার্থপরের মত নিজের চিন্তাটাই করি। একজন পুরুষ কি করে অর্থের যোগান দিচ্ছে, সেটা আমারা কখনো জানতে চাই না। বরং বাসায় ফেরার পর হাজার প্রশ্নের জবাব চাই। সারাদিনের ক্লান্তিটাকে আরো দীগুণ বাড়িয়ে দেই। আর সকল স্বামী কিংবা পুরুষ পরিস্থিতির স্বীকার। এভাবে কখনো বাসায় সময় কাটায়নি। তাই আমাদের উচিত তাদেরকে সম্মান, আদর, ভালোবাসা, যত্ন নেওয়া। কিন্তু না, আমারা অনেকেই আছি যারা স্বামীকে অসম্মান, অবহেলা, তাচ্ছিল্য করি। অনেক পুরুষই আছেন যারা কম-বেশি অসুস্থ থাকেন, তার উপর করোনা আজ কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কি করবে? বাইরে তো যেতেই হবে, সংসার চালাতে হলে। কিন্তু এটাকে আমরা মেনে নিতে চাই না। আলাদা করে দি। কেউ কেউ আছে স্বামীর কাছে পর্যন্ত যায়না। জেলখানার আসামির মত তার সাথে ব্যাবহার করি। আলাদা রুম, খাওয়া-দাওয়া আলাদা। উকি দিয়েও দেখেনা লোকটি কি করে একা একা সময় কাটায়। আমারা যে যার মত আনন্দ করছি, টিভি দেখচি, সন্তানের সাথে সময় পাড় করছি। বিচিত্র দেশ, বিচিত্র সব মানুষ। আফসোস হয়! স্বামীর টাকায় ফুটানি করছি, নিজের নামে বাড়ি করছি, টাকা জমাচ্ছি, পাল্লায় পাল্লায় ড্রেস কিনছি। আর আজ এই একটা রোগ মানুষকে কতটা নিচে নামাচ্ছে। যে মানুষটা আমাদের জন্য এতটা চিন্তিত, আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে, অথচ আমরা তাকে মরার আগেই মেরে ফেলছি অবহেলা আর অবজ্ঞা করে। আমাদের মত যারা হাউজ ওয়াইফ, তাদের কাছে স্বামী ব্যাপারটা অনেকটা গুরুত্বের। যার নাই সে জানে জীবনের জন্য একটা পুরুষের কতটা গুরুত্ব। জীবনটা কত কঠিন। প্রভুর কাছে সব সময় বলি এমন বিপদ যেন কোন নারীর না হয়। কিন্তু কিছু কপাল পোড়া, হতভাগা নারী আছে, তাদের জীবন কলঙ্কময়। স্বামীর গুরুত্ব তাদের কাছে মূল্যহীন। আমি সেই সব নারীদের উদ্দেশ্যে বলছি, স্বামীকে সম্মান করুন, শ্রদ্ধা করুন। ভাবুনতো আপনার স্বামীকে আপনি অসম্মান, অবজ্ঞা করছেন, আপনার স্বামী ইচ্ছে করলেই বাইরে রাত কাটাতে পারতো, নেশা করতে পারতো, অপকর্ম করতে পারতো। কিন্তু না, তিনি দিন শেষে রাতে আপনার কাছেই ফেরে। এটাইবা কজনার ভাগ্যে জোটে? আপনার নীড় আপনি স্বর্গময় করুন, স্বামীর নিঃশ্বাসটুকু পুঁজি করবেননা। তার ভালোবাসা অর্জন করুন, তার চোখের একফোঁটা অশ্রু আপনাকে জাহান্নাম এনে দিতে পারে। তাই অনুরোধ আমারা সকলে আমাদের সংসারটাকে জান্নাতে পরিনত করি। পরিবারের সকলকে ভালোবাসি সবাই সবার জন্য। বাঁচার মত বাঁচবো, মরার আগে মরবো না, এই দৃঢ় প্রত্যয় আমাদের সকলের মাঝে অটুট থাকুক এই কামনায় আমরা সবাই করোনা পরিস্থিতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখি এবং স্বাস্থ বিধি মেনে চলি। আল্লাহ্ সবাই কে বোঝার তৌফিক দান করুক, আমিন।
লেখকঃ-শারমিন রিনা
সম সাময়িক কবি ও সাহিত্যিক