দিঘলিয়া উপজেলায় দিন দিন কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও গত সাত দিনে উপজেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের গড় হার প্রায় ৩৬ শতাংশ। সংক্রমনের এ হার কোভিড-১৯ সংক্রমনের সূচনালগ্ন থেকে সর্বচ্চ। দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত সাত দিনে ১৮৫ টি নমুনা পরিক্ষা করে ৬৬ টি নমুনাতে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে।
সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে দিঘলিয়ার কোভিড পরিস্থিতি ‘শোচনীয়’ হতে পারে। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র যৌথভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ও লকডাউন কার্যকর করতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। এপর্যন্ত দিঘলিয়া উপজেলাতে করোনা ভাইরাসে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩২৬ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২৩১ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ জন, ৮৮ জন হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আজ ২৭ জুন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৩৯ জনের র্যাপিড এন্টিজেন টেষ্ট পরীক্ষা করে ৮ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।
এ দিকে জেলা প্রশাসক ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিন (২২ জুন) থেকে দিঘলিয়া উপজেলায় কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে। উপজেলাধীন সকল বাজার, দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। শহরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম ১৮ টি খেয়াটঘাট ও ২টি ফেরিঘাট চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধু জরুরী প্রয়োজনে, রোগী পারাপার, কৃষি পন্য পরিবহন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারাপারের জন্য সীমিত আকারে নগরঘাট, আড়ুয়া এবং চন্দনীমহল খেয়াঘাট খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মাহবুবুল আলম জানান, এ উপজেলাতে করোনা সংক্রমন কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায় চলে গেছে, এখন উপজেলার প্রায় সর্বত্র কোভিড-১৯ পজেটিভ রুগী রয়েছে। তিনি উপজেলাবাসী কে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার আহ্ববান জানান। সরকারি নির্দেশনা মেনে সবাই কে ঘরে অবস্থান করতে বলেন এবং করোনা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষন দেখাদিলে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে র্যপিড এন্টিজেন টেষ্ট করতে বলেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে কারো কোন পরামর্শ এবং সহযোগীতার প্রয়োজন হলে তিনি ইমারজেন্সী মোবাইল নং. – ০১৭৩০-৩২৪৫৯৫ ও ডাঃ বাদল চন্দ্র দেবনাথ (এমওডিসি) মোবাইল নং. – ০১৮২৩-৬৩২০৭৩ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য আইসোলেশনে থাকা রোগীদের নিয়মিত প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুল আলম বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। তিনি উপজেলাবাসীকে করোনা সংক্রান্ত সরকারী নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলার এবং লকডাউন চলাকালীন জরুরী প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। কারোর জরুরি খাদ্য সহযোগীতার প্রয়োজন হলে ৩৩৩ এ কল করে অবহিত করার জন্য বলেন। উপজেলা প্রশাসন যাচাই বাছাই করে দ্রুত খাবার পৌঁছে দেবে। তিনি এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সন্মিলিতভাবে সবাইকে উপজেলা প্রশাসনকে সহযোগীতা করার আহবান জানিয়েছে।