মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। ২০২০ সালে দারিদ্র্যের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ। ২০১৮ সালে যা ছিল ২৪.৫ শতাংশ। সে হিসাবে দুই বছরের ব্যবধানে দারিদ্র্যের হার প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
দেশব্যাপী খানা পর্যায়ের জরিপের ভিত্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)। নিজেদের অর্থায়নে সংস্থাটি এই জরিপ পরিচালনা করেছে।
শনিবার ভার্চুয়াল আলোচনায় সানেমের এ জরিপ তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪.৩০ শতাংশ। ২০১৮ সালে জিইডি সানেমের গবেষণা অনুযায়ী, দারিদ্র্যের হার ২১.৬০ শতাংশ ছিল। কিন্তু সানেমের ২০২০ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরের গবেষণায় দারিদ্রের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ।
বিবিএসের খানা জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে দেশের গ্রামাঞ্চলের সার্বিক দারিদ্র্যের হার ছিল ২৬.৪ শতাংশ। ২০১৮ সালের জিইডি-সানেম জরিপে যা ২৪.৫ শতাংশে নেমেছিল। কিন্তু করোনার প্রভাবে ২০২০ সালে এই হার বেড়ে ৪২ শতাংশ হয়ে গেছে। শহরাঞ্চলে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ২০১৬ সালে ছিল ১৮.৯ শতাংশ। ২০১৮ সালে ছিল ১৬. ৩ শতাংশ। আর করোনার সময়ে ২০২০ সালে এই হার বেড়ে ৩৫.৪ শতাংশ হয়েছে।
সানেমের জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালে দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে রেমিটেন্স বা প্রবাসীয় আয়ের ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হলেও ব্যক্তি পর্যায়ে তা বরং কমে গেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, অনানুষ্ঠানিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবাসী আয় এসেছে। এতে বিনিময় হার কমে গেছে।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, করোনার প্রভাবে দরিদ্রতা নেমে আসায় মানুষ খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি অনেকে সঞ্চয় ভেঙে জীবন নির্বাহ করেছেন, কেউ ঋণ নিয়েছেন, আবার কেউ খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেছেন।
সানেমের জরিপে আংশ নেওয়াদের মধ্যে ৭.৫২ শতাংশ পরিবার বলেছে, করোনার প্রভাবের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়ানোর কোনো পথই পায়নি।