করোনার আসন্ন দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই একটি প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ৩০ লাখ টাকার আবদার করা হয়েছে প্রশিক্ষণ, সভা-সেমিনার ও কনফারেন্স বাবদ। পরিকল্পনা কমিশনে এমন প্রস্তাব করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)।
সওজ-এর এমন প্রস্তাবনায় প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা বিভাগের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।
মাতারবাড়ি কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের (সওজ অংশ) ওপর চলতি বছরের ২৩ নভেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। নগরীরর এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. মামুন-আল-রশীদ। সভায় আইএমইডি প্রতিনিধি করোনার মধ্যে প্রকল্প থেকে সভা-সেমিনার বাবদ ৩০ লাখ টাকা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেন।
আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসছে। এই দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সতর্কতাই আসল । এজন্য প্রকল্পের আওতায় সভা-সেমিনার ও কনফারেন্স বাবদ বরাদ্দ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় নতুন হিসেবে ৭০ দশমিক ০২ মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। ছোট ব্রিজ নির্মাণে ৩৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় চাওয়া হয়েছে, যার প্রতি মিটারে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। পরিকল্পনা কমিশনে এমন প্রস্তাব করেছে সওজ। ছোট ব্রিজ নির্মাণে মিটারপ্রতি অধিক ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, যেখানে বড় কোনো সেতুর প্রতি মিটারে ব্যয় ২৭ লাখ টাকা, সেখানে ছোট ব্রিজে মিটারপ্রতি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা অনেক বেশি। ব্যয় পুনঃপর্যালোচনা করে যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। এ বিষয়ে সভায় সংশ্লিষ্টরা একমত পোষণ করেন।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ইউনিট থেকে ১ হাজার ২ম মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন পায় ২০১৪ সালের জুলাই মাসে। ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে কাজ শেষ হওয়ার কথা।
প্রস্তাবিত মাতারবাড়ি কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (সওজ অংশ) কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে জিওবি ও জাইকার অর্থায়নে মোট ৬০২ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা।
ব্যয় ও প্রকল্পের মেয়াদ এরই মধ্যে দুই বছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের আওতায় কিছু নতুন কাজের আইটেম অন্তর্ভুক্ত, অনুমোদিত সেতুর দৈর্ঘ্য বাড়ানো, সড়ক অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনসহ সংশ্লিষ্ট অঙ্গ ও ব্যয় বাড়ার কারণে মোট ব্যয় বেড়ে ৯৫৭ কোটি ২৮ লাখ হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।
প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো প্রসঙ্গে সওজ প্রতিনিধি বলেন, দর শিডিউল-২০১৯ সিসিজিপির মাধ্যমে অনুমোদিত। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেট শিডিউল-২০১৮ সালে প্রাক্কলন করা হয়েছে। যে কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে।