মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে ‘বার্ড ফ্লু’। এতে মৃত্যুও হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই দেশটির জনগণের মাঝে উদ্বেগ বাড়ছে।
সতর্কতাস্বরূপ ইতোমধ্যে দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে নানা খামারে হাজার হাজার হাঁস-মুরগি মেরে বা পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। বার্ড ফ্লু ছড়ানোর জন্য পরিযায়ী পাখিকেও দায়ী করা হচ্ছে।
তাই এসবের সংস্পর্শে আসা কিংবা মাংস খাওয়া নিয়ে জনসাধারণকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এককথায় সারাদেশে বার্ড ফ্লু বিস্তারের আশঙ্কায় তোড়জোর শুরু হয়েছে।
বার্ড ফ্লু
এটি ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় রোগ। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। সাধারণত পাখির মাধ্যমে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়। পাখি এক জায়গা থেকে সহজে অন্য স্থানে যেতে পারে। ফলে বার্ড ফ্লুও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এটি একটি বায়ুবাহিত রোগ।
লক্ষণ
এতে আক্রান্তের পর দেহে প্রাথমিকভাবে জ্বরের লক্ষণ প্রকাশ পায়। সেই সঙ্গে গা ব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজ, সর্দি- ঠাণ্ডা লাগা, হাঁচি দেয়া, কাশি, মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে টান, বমি, পেট খারাপ, ডিহাইড্রেশন, নাড়িতে খিঁচুনির উপসর্গ দেখা যায়।
অনেকের ক্ষেত্রে এসব লক্ষণ খুব বেশি মাত্রায় দেখা যায়। ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। কারও কারও এ সংক্রমণ থেকে এনসেফেলাইটিস, হৃদপিণ্ডের সমস্যা, মায়োসাইটিস হয়।
যেভাবে ছড়ায়
আক্রান্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে অন্য ব্যক্তির দেহে বার্ড ফ্লু ছড়ায়। তার কাশি-হাঁচি-থুতুর মাধ্যমেও বিস্তার ঘটে। সংক্রমিত পাখির ডিম অথবা মাংস খেলে এ রোগ হয়। এটি ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগ। চালান করলে তা বহন করে নিয়ে যায় হাঁস-মুরগি।
শনাক্ত
বার্ড ফ্লু নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রক্তে এ ভাইরাসের অ্যান্টিবডি পিসিআর পদ্ধতিতে দেখে তা শনাক্ত করা যায়। ১৯৯৭ সালে প্রথম এ এইচফাইভএনওয়ান (H5N1) ভাইরাসের সন্ধান মেলে।
প্রতিকার
বার্ড ফ্লুর প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ওষুধ রয়েছে। পাশাপাশি এতে সংক্রমিত হলে হাঁস, মুরগি বা অন্যান্য পাখির মাংস না খাওয়ায় শ্রেয়। চিড়িয়াখানা কিংবা অভয়ারণে এসব ধরা অথবা নাড়াচাড়া করা যাবে না। অসুস্থ হাঁস, মুরগি বা অন্যান্য পাখির থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে। যেকোনো মাংস সঠিকভাবে ভালো করে সিদ্ধ করে খেতে হবে। কাঁচা বা আধাসিদ্ধ খাওয়া যাবে না।