চট্টগ্রাম: বৈশ্বিক মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত শিল্পোদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে ব্যাংকঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার সময়সীমা ও ঋণ শ্রেণিকরণ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন।
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরকে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আলমগীর কবির বলেছেন, কোভিড-১৯ প্রকোপের ফলে বিশ্বব্যাপী আকস্মিক মহামারি ও অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা বিরাজ করছে।
আমরা এখনো জানি না, এ রোগের প্রাদুর্ভাব কখন শেষ হবে। এর বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে এবং এ বাস্তবতা মেনে নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ জরুরি অবস্থা থেকে উত্তরণ ও এর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনার জন্য সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বহুবিধ আর্থিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক বিআরপিডি ও ডিএফআইএম সার্কুলারের মাধ্যমে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঋণ শ্রেণিকরণ ও ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তফসিলি ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বিদ্যমান সব মেয়াদি ঋণ/লিজ/অগ্রীমের বিপরীতে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তিগুলো পরিশোধ না করলেও ঋণের শ্রেণিমান ১ জানুয়ারি ২০২০ যা ছিল তাই বহাল থাকবে। তবে কোনো ঋণমানের উন্নতি হলে তা যথাযথ নিয়মে শ্রেণিকরণ করা যাবে। এ পদক্ষেপের ফলে করোনায় বিধ্বস্ত অর্থনৈতিক মন্দা ব্যবসায়ীরা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন। দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসায়ের কথা বিবেচনায় নিয়ে ঋণ পরিশোধে বাধ্যবাধকতার সময়সীমা ও ঋণ শ্রেণিকরণ চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত করলে দেশের অর্থনীতি ও শিল্প খাতে মন্দাভাব কাটিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পারবে।
শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে বেশিরভাগ ব্যাংকঋণ নেওয়া শিল্পমালিক, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা শঙ্কার মধ্যে আছেন। তাদের দাবি আগামী জুন পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার সময়সীমা ও ঋণ শ্রেণিকরণ বাড়ানো এবং নন ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনের সুদের হার ব্যাংকের মতো নির্ধারণ করা।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম চেম্বার থেকেও এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছি। যাতে আমরা বলেছি, বাংলাদেশ ব্যাংক সব তফসিলি ব্যাংকের ঋণের ওপর ৯ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করেছে। কিন্তু নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের ওপর ১৩-১৫ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করছে, যার ফলে ব্যবসায়ের ব্যয় বাড়ছে-যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সুদের উচ্চহার উদ্যোক্তাদের অতিরিক্ত ঝুঁকিতে ফেলে এবং শিল্পের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করে। উক্ত নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুদের হার না কমালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না।