নাফি উজ জামান পিয়াল, যশোর প্রতিনিধি : করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে যশোর জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। রোগীদের জন্যে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আলাদা আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে জরুরি মেডিকেল টিমও। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও নোভা মেডিকেল ইতোমধ্যে করোনা রোগীদের জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। একইসাথে ইবনে সিনা হাসপাতাল ও আর্মি মেডিকেল কলেজে রোগীদের শয্যা প্রস্তুতের জন্যে আলোচনা চলছে।
গত এক মাসে প্রায় ২২ হাজার মানুষ যশোরের ঠিকানা ব্যবহার করে বিদেশ থেকে আসলেও হোমকোয়ারেন্টাইনে আছেন মাত্র ৩২৩ জন। বাকিরা কোথায় আছেন, কীভাবে আছেন তার কোনো চিত্র প্রশাসনের কাছে নেই। তাদের কাছে ২২ হাজার ব্যক্তির একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। যাদের পাসপোর্টে যশোরের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। তবে, তারা সবাই যশোরে অবস্থান করছেন কিনা তা কারো জানা নেই। তালিকাটি সব উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। যশোরে অবস্থান করলে সব বিদেশফেরত ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণে আনতে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। আবার যারা হোমকোয়ারেন্টাইনের আছেন বলে জানানো হয়েছে তারাও সঠিকভাবে নিয়ম মানছেন না। এসব কারণে যশোরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। করোনার ঝুঁকি এড়াতে প্রতিটি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্যদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ওয়ার্ডের বিদেশফেরত ব্যক্তির হোমকোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করবে। কোনো ব্যক্তি কমিটির নির্দেশনা না মানলে জেলা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করবে।
সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সকল উপজেলা হাসপাতালে সাড়ে চারশ’ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ড, সেবিকা, রোগী পরিবহনের জন্য আলাদা অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া, বেনাপোল স্থলবন্দরে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্যানার এবং অতিরিক্ত হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, হাসাপাতালে রোগীর সাথে আসা স্বজনদের সংখ্যার ব্যাপারে কোনো আইন না থাকার কারণে ভিড় বেড়ে যাচ্ছে।
এতে করে হাসপাতালে ভিজিটিং আওয়ারে লোক সমাগম অনেক বেশি হচ্ছে। আর এতে সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়ে যতে পারে।
তবে, সচেতনতার ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। ঠান্ডা, কাশি, গলায় ব্যথা রোগীদের জন্যে হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড করা হয়েছে। এ সকল রোগী সেখান থেকে চিকিৎসা নিবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যে মাস্ক, গাউন, হ্যান্ডওয়াশ মজুত করা হয়েছে।
পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বলেন, পৌরসভা স্বাস্থ্য বিভাগকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। তাদের একটি টিম করোনাভাইরাস নিয়ে মাঠে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে ভাইরাস প্রতিরোধে স্প্রে করা হবে।