চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃসম্প্রতি সরকারিভাবে এমপিওভুক্তি হতে না পারায় মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করেছেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে কলেজের সামনের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পরিচালনা পরিষদ, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
উন্নত শিক্ষার মান, ভাল ফলসহ এমপিওভুক্তির সকল শর্ত পূরণ করেও এমপিওভুক্তি হতে পারেনি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার নারী শিক্ষার একমাত্র এই বিদ্যাপীঠ। গত ১৯ বছর ধরে কমলগঞ্জে নারী শিক্ষা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও এমপিও বঞ্চিত রয়েছে এ কলেজটি।
মানববন্ধনে আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক শর্মিলা সিনহার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- কলেজ অধ্যক্ষ মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন, কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমদ, আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোমিন তরফদার, ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান, আদমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাব্বির আহমদ ভূঁইয়া, উপজেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি অধ্যাপিকা মঞ্জুশ্রী রায় প্রমুখ।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়কটি এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এ সময় রাস্তার দুই দিকে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে।খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসি একদল পুলিশসহ ঘটনাস্থলে এসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য কথা বলার আশ্বাস দেয়ার পর দুপুর ১২টার পর সড়ক অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
পরে কলেজের পক্ষ থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে নির্বাচিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের (উচ্চ মাধ্যমিক স্তর) এমপিওভুক্তির আওতায় আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজকে এমপিওভুক্তি করণের জন্য কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক স্মারকলিপি গ্রহণের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্মারকলিপিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন।’
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘২০০০ সালে আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা প্রতিষ্ঠা হয়। এখানে মণিপুরী, খাসিয়া, চা শ্রমিকসহ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী ও গ্রামাঞ্চলের মেয়েরা পড়াশোনা করছে। ২০০২ সালে কলেজটি অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। ২০০৪ সালে মৌলভীবাজার জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। ২০০৪ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ভেন্যু হয়েছে। এ কলেজে ১৬ জন শিক্ষক ও ৫ জন কর্মচারী টানা ১৯ বছর ধরে অনেকটা স্বেচ্ছাশ্রমে পাঠদান করছেন। এমপিওভুক্তির নীতিমালা মেনে আবেদন করলেও গত ২৩ অক্টোবর সরকার ঘোষিত এমপিওভুক্তির তালিকায় কলেজটি অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষাদান করে আসা শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ চরম হতাশায় ভেঙে পড়েন।