জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব দ্রব্যাদির মূল্য দ্বিগুণ হয়। মুল্য বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা বাজারে দ্রব্যাদি কিনতে হিমশিম খাচ্ছে।
এক সপ্তাহ আগেও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৩০-৩৫ টাকায় আর কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ৫০-৬০ টাকায়। আর খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৪০-৪২, কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ৭০-৮০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে বিভিন্ন খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫ টাকা দরে আর কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। সেই সাথে মুরগির দাম অব্যাহতভাবে বেড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি বাজারের একই চিত্র। ক্রেতারা খানিকটা নিরুপায় হয়েই কিনতে হচ্ছে পণ্য। অনেকেই পেঁয়াজ ও মরিচ কিনতে এসে তা না কিনেই ফিরে গেছেন বাড়িতে। এই উপজেলায় স্বল্প আয়ের মানুষের সংখ্যা বেশী। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে ভোগান্তিতে পড়েছে অঞ্চলের ক্রেতারা। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের মূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার দাবি জানান তারা।
দেওয়ানগঞ্জ পৌর বাজারে আসা ক্রেতা শাহরিয়ার আহম্মেদ শোভন জানান, গত সপ্তাহে যে মূল্যে মরিচ কিনেছি আজ এসে দেখি তার দ্বিগুণ। আমাদের আয় আগের মতই স্থির রয়েছে। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য স্থির নেই। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নিয়ে বাজারে এসেছিলাম। কিন্তু বাজারে এসে অল্প পরিমাণ বাজার করেই সেই টাকা শেষ হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয় করা প্রয়োজন।
উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ঝালোরচর বাজারে বাজার করতে আসা দপরপাড়া’র কৃষক আসলাম হোসেন, নেহাল, মাসুদ, হাপাল জানান, আগের হাটে মরিচ পেঁয়াজ যে টাকা দিয়ে কিনেছি। আজকে এসে দেখি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যে টাকা এনেছি সেটা দিয়ে অল্প কিনেই বাড়ি যেতে হবে। এইভাবে দাম বাড়লে আমরা খাবো কি?
দেওয়ানগঞ্জ পৌর বাজারের কাঁচামালের খুচরা বিক্রেতা মিজান বলেন, আড়তদারদের কাছ থেকে কয়েক দিন আগে পেঁয়াজ-মরিচ যে দামে কিনেছি, এখন তা দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে কিনলে তো বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া উপায় থাকে না।
দেওয়ানগঞ্জ বাজারের কাঁচামালের পাইকারি বিক্রেতা ফারুক ট্রেডার্সের মালিক মো. ফারুক হোসেন বলেন, পাইকারি বাজার থেকে মরিচ-পেঁয়াজ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, এজন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমদানি কম হচ্ছে, এজন্য দাম বেড়ে গেছে। আর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাদের উপজেলায় পণ্য আসতে পরিবহণ ভাড়া কিছুটা বেশি। তাই সকল কিছু মিলিয়েই দামটা বেড়ে যাচ্ছে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুন মুন জাহান লিজা বলেন, বাজার মনিটরিং করার জন্য ইতিমধ্যেই উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি মরিচ-পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করবেন। পাশাপাশি আমরাও অনুসন্ধান করব।