খুলনার তেরখাদা উপজেলার লস্করপুর গ্রামে দ্বীন ইসলামকে সাঁতার প্রতিযোগিতায় জয়-পরাজয়কে কেন্দ্র করে কাঁদা ছুড়াছুঁড়িতে হত্যা করা হয়েছে। প্রায় দুই বছর হত্যাকান্ডের মূলরহস্য উন্মোচন ও আসামীদের গ্রেফতার করেছে পিবিআই খুলনা। রোববার (১০ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান।
নিহত দ্বীন ইসলাম (১১) তেরখাদার লস্কর গ্রামের আজিজুর রহমান শেখের ছেলে। সে এলাকার বিভিন্ন খালে বিলে মাছ ধরে এবং স্থানীয়ভাবে এলাকার বিভিন্ন স্থানে মৌসুমী ফল বিক্রি করতো।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই দুপুরে দ্বীন ইসলামকে কোথাও খুঁজে না পাওয়া গেলে তাকে পাওয়ার জন্য মাইকে প্রচারসহ বিভিন্ন খানে তার আত্বীয়-স্বজন খুজতে থাকে। একপর্যায়ে ভিকটিমের মৃতদেহ তেরখাদা মুলিশিয়া খালে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এঘটনায় নিহতের পিতা আজিজুর রহমান তেরখাদা থানায় অপমৃত্যু মামলা করেন। পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হত্যাকান্ড ঘটনা আসলে প্রথম দিকে ভিকটিমের লােকজন মামলা করতে না চাইলে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে সুত্রে বর্ণিত মামলাটি দায়ের করে। ভিকটিমের পিতা ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালতে আবেদন করলে আদালত মামলাটি পিবিআই খুলনায় প্রেরণ করেন। পিবিআই খুলনা ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর মামলাটি তদন্তভার গ্রহন করে। মামলাটি নিরবিচ্ছিন্ন তদন্ত করে প্রকৃত আসামীদের শনাক্ত করা হলেও আসামীরা আত্মগােপনে থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যায় নাই। পরবর্তীতে নিরবিচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে তেরখাদার লস্করপুর এলাকার মোঃ কালন শেখের ছেলে মােঃ মুছা শেখ (২৭) ও এমলাক শেখের ছেলে মােঃ হানিফ শেখ রমজান শেখ (২১) কে গ্রেফতার করা হয়।আদালতে সােপর্দ করা হলে তারা স্বীকারােক্তিমুলক জবানবন্দী দেয়।
হত্যাকান্ডের বর্ণনায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বলেছে, ঘটনার দিন মুছা শেখ, রমজান শেখ, তেরথাদার লস্কর গ্রামের মোঃ আলাল সরদারের ছেলে ইতার আলী সরদার (২৪), মোঃ সিদ্দিক শেখের ছেলে ফেরদৌস শেখ (২৪), আলাল সরদারের ছেলে হানিফ সরদার (২১) মুলিশিয়া খালে গােসল করার সময় সাঁতার প্রতিযােগীতা নিয়ে বিরােধ হলে তারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে ভিকটিম দ্বীন ইসলাম পানিতে ডুবে যায়। তারা ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়। পিবিআই খুলনা নিরবিচ্ছিন্ন তদন্ত করে মামলার মূল রহস্য উন্মােচন করলো। শিগগিরই আদালতে পূর্নাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন পিবিআই এসপি।