সাতক্ষীরার বসন্তপুরের নৌ-বন্দর পুনরায় চালু করতে মন্ত্রী পরিষদ প্রস্তবনা পাঠানো হয়েছে। এরই লক্ষ্যে নভেম্বর, ২০২০ এর দ্বিতীয় পক্ষের পাক্ষিক গােপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গৃহীত প্রস্তাবনা নিমোক্ত বিষয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে উপস্থাপন করা হয়।
উল্লখ্য যে, সাতক্ষীরা জেলার সদর, কলারােয়া, দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর এই পাচটি উপজেলার সাথে ভারতের ২৭১ কিলােমিটার দৈর্ঘ্যের সীমান্ত রয়েছে। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পূর্বে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর নামক স্থানে একটি নৌ-বন্দর বিদ্যমান ছিল। বসন্তপুর পােট হতে ভারতের হিঙ্গলগঞ্জ পর্যন্ত যাতায়াত ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু ছিল। তখন সেখানে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন বিভাগের কার্যক্রমও চালু ছিল। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর উক্ত রুটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও স্থানীয় জনগণ উক্ত রুটে যাতায়াত করত।
স্বাধীনতার পরও এই পথ দিয়ে অনানুষ্ঠানিক ভাবে দুই দেশের মানুষের চলাচল ছিল। নৌপথে উল্লিখিত স্থান দিয়ে কালিগঞ্জের বিখ্যাত নাজিমগঞ্জ বাজার ও ভারতের হিঙ্গলগঞ্জের মধ্যে বাণিজ্য ও সাধারণ পৃটিকদের যাতায়াতের ব্যবস্থা চালু ছিল যা ১৯৯৬ সালের পরে আইনানুগভাবে পুনরায় চালু না করার কারণে সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে যায়। পাের্ট চালু থাকাকালীন শুল্ক বিভাগের ব্যবহৃত রামজননী নামক ভবনটি এখনও শুল্ক বিভাগের গুদাম হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
প্রতি বছর শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার পর্যটক চিকিৎসা, ভ্রমণ, বাণিজ্য ইত্যাদি কারণে ভারতে গমনাগমন করেন।
প্রস্তাবিত নৌরুট স্থাপিত হলে তারা ৪৮ কিলােমিটার দূরবর্তী ভােমরা পাের্টে না গিয়ে সহজে সাশ্রয়ীভাবে নৌরুট ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া নৌপথে পণ্য পরিবহন তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী বিধায় পণ্য পরিবহন খরচও কম হবে। প্রস্তাবিত নৌ-রুটটি চালু হলে আন্তদেশীয় প্রবাহমান ইছামতি নদী পথে ভারতের বসিরহাট পাের্ট হতে বাংলাদেশের মংলা পাের্ট পর্যন্ত পণ্য আমদানি-রপ্তানি করাও সম্ভব হবে।
সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর পােটটি(বর্তমানে বিলুপ্ত) পুনরায় পরীক্ষা নিরীক্ষাপূর্বক চালুর বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে সদয় নির্দেশনা প্রদান করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সদয় অনুমােদন করেছেন। উল্লিখিত অনুশাসন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনপূর্বক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরােধ করা হয়েছে।