চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে স্বাধীনতা বিরোধী ২২ রাজাকার ঠাঁই পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়। পাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা ও বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা। তাদের পোষ্যরাও সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ পেয়েছে। এই অভিযোগ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কালিগঞ্জ ইউনিটের নেতৃবৃন্দসহ মুক্তিযোদ্ধাদের। অভিযুক্তদের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছেন তারা।
কালিগঞ্জ ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিম, সাংগঠনিক কমান্ডার শেখ অজিয়ার রহমান, সহকারী কমান্ডার আব্দুর রউফ, শেখ মনির আহম্মেদসহ ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ২২ জন রাজাকার বিভিন্ন কৌশলে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় গেজেটভুক্ত হয়েছেন। নিচ্ছেন সম্মানী ভাতা। অন্যান্য সুবিধাও ভোগ করছেন তারা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও ২৬ মার্চ-২০২০ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা আগামী ৩০ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা ও ডিজিটাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদান করবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। মুক্তিযোদ্ধাদের এ তালিকা থেকে কালিগঞ্জের ২২ রাজাকারের নাম বাদ দেয়া ও সম্মানী ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা থেকে বাদ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে অভিযোগপত্রে।
কালিগঞ্জের যে ২২ জনকে রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তারা হলেন, উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের মৌতলা গ্রামের শেখ সবুরের ছেলে মেহের আলী (গেজেট নং-১১৩৯), মৃত কাদের খাঁর ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (১৮৫৪), খাঁন আব্বাস আলীর ছেলে আজিজুর রহমান (১১৫৯), বিলায়েত আলী মোল্লার ছেলে বাহাদুর মোল্লা (১৩৪৬), খান শাহাবুদ্দীনের ছেলে ফজলুল হক (১২০৩), কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের নেঙ্গী (বর্তমান গ্রাম গণপতি) গ্রামের মৃত নাজিম উদ্দিনের ছেলে শেখ মোতাহার হোসেন (১৩৫৫), বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের হোগলা গ্রামের মৃত গোলাম রহমানের ছেলে আরশাদ আলী (১৩৭৭), দক্ষিণশ্রীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণশ্রীপুর গ্রামের মৃত গহর আলী গাজীর ছেলে আব্দুস সামাদ (১২৫৫), ফতেপুর গ্রামের মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (১৩৭৮), কুশুলিয়া ইউনিয়নের কাশেমপুর গ্রামের মৃত অছিমুদ্দীনের ছেলে শেখ আকবর আলী (১২৬৬), মহৎপুর গ্রামের মৃত শেখ মনির উদ্দিনের ছেলে শেখ আলী মোর্ত্তজা (১২৭৫), একই গ্রামের মৃত মোহর আলী খানের ছেলে আশরাফ হোসেন খান (১২৭৬), বদর উদ্দিনের ছেলে শেখ মোকছেদ আলী (১২৬১), বাজারগ্রাম রহিমপুর গ্রামের মৃত গহর আলীর ছেলে জহুর আলী (১০৯৫), ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের ভাড়াশিমলা গ্রামের শেখ মাওলা বকস্ এর ছেলে পিরুল হক (১২০০), ব্রজপাটুলী গ্রামের মৃত সাদুল্যাহ গাজীর ছেলে মৃত মাজেদ গাজী (১৩৫৪), মথুরেশপুর ইউনিয়নের শীতলপুর গ্রামের শেখ আব্দুল বারীর ছেলে শেখ আব্দুল কাশেম (১০৮৫), গণপতি গ্রামের শেখ আহম্মদ আলীর ছেলে শেখ আছাদুর (১১৪৩), ছনকা গ্রামের মৃত শেখ সিদ্দিক আলীর ছেলে মৃত শেখ আব্দুল ওয়াহেদ (১১৬৮), বসন্তপুর গ্রামের বাছতুল্যাহ কারিকরের ছেলে আজু কারিকর (১৩৮৫), মুকুন্দপুর গ্রামের মৃত নেদু গাজীর ছেলে আবুল হোসেন (১০৭৫) ও ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের দাঁড়িয়ালা গ্রামের মৃত শেখ সুলতানের ছেলে শেখ ইব্রাহীম (১২০৩)।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কালিগঞ্জ ইউনিটের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। এটি একটি সেনসেটিভ বিষয়। ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে তারপর এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।