চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ আমার তৈরি করা আর্টিফিশিয়াল বনসাই গাছ….অরজিনাল তো অনেক দাম, আবার রক্ষণাবেক্ষণেও অনেক ঝামেলা, ঘরের সৌন্দর্য্য বর্ধন, ঘরের কোণে একটুখানি সবুজ কে-না ভালোবাসে….তাই কৃত্রিমভাবে চেষ্টা করলাম, জানিনা কেমন হয়েছে….আসুন বেশি করে গাছ লাগাই’ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুকে এভাবেই একটি পোস্ট দেন খুলনার তরুণ উদ্যোক্তা ও গ্রাফিকস ডিজাইনার মো. খালিদুল ইসলাম স্বাধীন (লিটন)।
লিটনের নিজের হাতে তৈরি শখের ‘বনসাই’র ছবিসহ এই পোস্ট দেখে সৌন্দর্য্য পিপাসুরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। তারা যে কোনো মূল্যেই এ বনসাই পাওয়ার প্রত্যাশা করেছেন। অনেকেই কমেন্টস করেছেন, ছবি দেখে মনেই হয়নি যে এটা কৃত্রিম, বিষয়টি উল্লেখ না করলে বুঝতেই পারতাম না’। অনেকেই বলেছেন, ‘একটি চাই-ই চাই’।
শখের ‘বনসাই’ নিয়ে তরুণ উদ্যোক্তা ও গ্রাফিকস ডিজাইনার মো. খালিদুল ইসলাম স্বাধীন (লিটন) এ প্রতিবেদকের কাছে তার ‘বনসাই’ প্রেমের কথা উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, কিভাবে বনসাই তৈরি করেছেন, উপকরণ, খরচ সর্বোপরি প্রেরণার উৎস সম্পর্কেও।
কৃত্রিম বনসাই তৈরির উপকরণ : কৃত্রিম বনসাই তৈরি করতে জিআই তার, হোয়াইট সিমেন্ট, সাধারণ সিমেন্ট, চক পাউডার, যে কোনো পানি রঙ এবং আর্টিফিশিয়াল পাতা প্রয়োজন হয়। এর একেকটা তৈরি করতে ৪/৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগে।
তৈরির পদ্ধতি : কৃত্রিম বনসাই তৈরি করতে হলে প্রথমে জিআই তার দিয়ে বনসাই’র একটি স্ট্রাকচার তৈরি করতে হবে। এরপর সিমেন্ট, চক পাউডার ও পানি রঙ মিক্সড করে জিআই তারে প্রলেপ দিতে হবে। এভাবে ১ থেকে ২ দিন প্রলেপ দেবার পর রঙ বিভিন্ন জায়গাতে দিতে হবে। টব, গাছের পাতা আর অন্যান্য উপকরণসহ প্রায় ৩শ টাকা খরচ পড়ে যায়।
উদ্যোক্তা খালিদুল ইসলাম স্বাধীন (লিটন) বলেন, বিভিন্ন বাসাবাড়িতে দেখি প্লাস্টিকের বিভিন্ন ধরনের গাছ, যেটা দেখলেই বোঝা যায় যে ওটা প্লাস্টিকের। আমার ইচ্ছা ছিলো- এমন একটা গাছ যেটা দেখলে মনে হবে পুরোপুরি আসল। আর বিশেষ করে বনসাই গাছ অনেকের একটা স্বপ্নও বটে, কিন্তু এটা দাম বেশি হওয়ায় এবং পরিচর্যার ভয়ে অনেকেই রাখতে পারে না। এ চিন্তা করেই ভাবলাম ফুল গাছ নয়, একটা বড় গাছের ছোট আকৃতি বানাবো। যেটা ঘরে রাখলে ঘরের শোভা বৃদ্ধি পাবে এবং কোনো পরিচর্যা করা লাগবে না। সর্বোপরি গাছের প্রতি ভালোবাসা এবং সবাইকে বেশি বেশি গাছের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি, সবার চোখের সামনেই অফিসে, কিংবা বসার রুমে বড় একটি গাছের ছোট আকৃতি দেখলে সবারই গাছকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করবে- এ স্বপ্ন থেকেই আমি কৃত্রিমভাবে এ বনসাই তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করি।
লিটন বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০টি গাছ তৈরি করেছি। এ ১০টি সেল করার জন্য না, ওটা বিশেষ একজনের অনুরোধে করেছি, অবশ্য ওনারা আমাকে বিল দিতে চেয়েছেন, আমি ওনাদের কাছে ঋণী তাই ভালোবাসা থেকেই করেছি’।
ভবিষ্যতে এ বনসাই বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার পরিকল্পনা আছে-কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে উদ্যোক্তা লিটন বলেন, এখনই বাণিজ্যিকভাবে তৈরির চিন্তা নেই। কারণ প্রতিটি গাছ তৈরিতে মোটামুটি খরচ আছে, আবার অনেক সময় এবং পরিশ্রমও করতে হয়। তবে, ব্যাপক সাড়া পেলে বাণিজ্যিকভাবে চেষ্টা করবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।