করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতির গতি প্রকৃতি কেমন হবে? বিশেষ করে এক সময়ের প্রতাপশালী বর্তমান ক্ষয়িষ্ণু বিএনপি’র ভূমিকা কি হবে? রাজপথ কি শান্তিপূর্ণ থাকবে, না সংঘাতময় হয়ে উঠবে। এর উত্তর এই মুহূর্তে কোনভাবেই আন্দাজ করা সম্ভব না। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র রাজনৈতিক নেতৃত্ব মূল্যায়নের জায়গায় পরিবর্তন আসতে পারে। কারণ চলমান করোনা পরিস্থিতিতে অনেক নেতার যোগ্যতার চেহারা সুরত প্রকাশ পেয়েছে। করোনা আমাদের একটা দুর্বল অর্থনীতি এনে দিচ্ছে। তাই রাজনৈতিক সহনশীলতা ছাড়া তা কোনভাবেই উত্তরণ সম্ভব হবে না। সংঘাতের রাজনীতি বাংলাদেশে আর উঠে দাঁড়াতে পারবে এমন সম্ভাবনার ছিটেফোঁটাও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তবে করোনা সংকট আরো ঘনীভূত হলে পেটে দিলে পিঠে সয়া জনগণ কোন প্রতিক্রিয়া হয়তো উপস্থিত করবে না। কিন্তু সরকার কতটা জনগণের পেট সামলাতে পারবে তা নিয়ে সংশয় আছে। বর্তমান সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে যারা হঠাৎ শতকোটি – হাজার কোটি টাকার পাহাড় গড়েছেন তাদের বদমাইশ অর্থনীতি অনেক কর্পোরেট হাউজ প্রসব করেছে। তাদের অন্যায় অহেতুক লোভ-লালসার ফাঁদে সরকার অনেকটাই নাজেহাল। সরকারের শুদ্ধি অভিযানে অনেকেই দেশ ছেড়ে পালানোর চিন্তাভাবনায় ছিলেন। করোনা পরিস্থিতি তাদের বিদেশ যাত্রা নিশ্চিত বিলম্বিত করবে। তাদের কাছ থেকে কালো টাকা আদায় করতে বিগত কোন অভিযানের আদলে যদি কিছু হয় তাহলে জনগণ সেই পরিস্থিতিকে স্বাগত জানাতে পারে। সরকারের শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে এটা ভালো উদ্যোগ হতে পারে। চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। কার্যত তারা সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়েছে। তবে পুলিশের ভূমিকা প্রশংসনীয়। তারা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার বিষয়টি কার্যকর করতে গিয়ে কঠোর অবস্থানে ছিল। যার জন্য তাদেরকে প্রাণ দিতে হচ্ছে। হচ্ছেন আক্রান্ত। আর আমলাতান্ত্রিক ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে তৈরি হয়েছে ঘোরতর জটিলতা। সর্বদলীয় ত্রাণ কমিটি গঠনের মাধ্যমে অথবা প্রতিটি ভোটারের নম্বরের ভিত্তিতে ত্রাণ বিতরণ করা হলে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নামতে হতো না। সেই সাথে করোনার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে থাকতো। এসব ত্রুটি-বিচ্যুতি এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না হলে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়াবে তা বোঝা কঠিন। জনগণের প্রত্যাশা শান্তির ধারায় ফিরুক বাংলাদেশের রাজনীতি।
লেখকঃ–আতিয়ার পারভেজ
গনমাধ্যম কর্মী