যশোর কেশবপুরে হামজা ব্রিকসের জমিতে জোরপূর্বক মাছের ঘেরের ভেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ একটি মহল চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানায় অভিযোগ দিয়েও নির্মাণ কাজ বন্ধ না হওয়ায় অবশেষে আদালতের নির্দেশে পুলিশ ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আদালত জমির প্রকৃত দখলদার কে তা সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্যে কেশবপুর থানা পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে খুলনার খালিশপুর এলাকার মৃত আব্দুর রশিদ মিয়ার ছেলে হুমায়ুন কবীর উপজেলার সীমান্তবর্তী আগরহাটি গ্রামের শ্রী নদীর অববাহিকার প্রকৃত কৃষকদের ৪০ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে মেসার্স হামজা ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা স্থাপন করে ইট উৎপাদন ও বিকিকিনির কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ভাটাটি স্থাপনকালে ভাটা মালিকের কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো ওই এলাকার ফকির চাঁদ বিশ্বাসের ছেলে শিমুল বিশ্বাস ও শংকর বিশ্বাস। চাঁদার টাকা না দেয়ায় ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি রাতে শিমুল বিশ্বাসের নেতৃত্বে শংকর বিশ্বাস, ফকির চাদ বিশ্বাস, সাধনা বিশ্বাস, শরিফুল মোল্লা, আক্তার হোসেন গোলদার, মহাসিন মোল্লাসহ ৭/৮ জন যুবক লাঠিসোটা নিয়ে ভাটার ম্যানেজার তপন চক্রবর্তীসহ অন্যান্য কর্মচারীদের মারপিট ও ভয়ভীতি, হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় হুমায়ুন কবীর বাদি হয়ে শিমুল বিশ্বাসসহ ৯ জনের নামে কেশবপুর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা করে (নং-১২, তাং- ১৮/০১/২০২১)। যা এখন আদালতে বিচারাধীন বলে বাদী জানান। এ নিয়ে ভাটা মালিকের সাথে শিমুল বিশ্বাসের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরই সূত্র ধরে শিমুল বিশ্বাস একের পর এক ওই ভাটার ক্ষতি সাধন করে চলেছে।
ভাটা মালিক হুমায়ুন কবীর অভিযোগ করেন, ভাটার ভেতর শিমুল বিশ্বাসের কোন জমি নেই। অথচ সে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে ভাটার জমিতে মাছের ঘেরের ভেড়িবাঁধ করার নামে আমার লাখ লাখ টাকার কাঁচা ইট নষ্টসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে ক্ষতিসাধন করে আসছে। তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এরই ধারাবাহিকতায়, গত ১৫ জুলাই সকালে শিমুল বিশ্বাস লোকজন নিয়ে ভাটার জমি জবর দখল করে মাছের ঘেরের ভেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। এ সময় ভাটা মালিক হুমায়ুন কবীর লোকজন নিয়ে বাঁধা দিলে তাদেরকে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে ভেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখে। এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কায় ভাটার জমিতে প্রতিপক্ষের কার্যক্রম বন্ধে ভাটা মালিক ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় যশোর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন (নং-১৪৬, তাং- ২৪/০৭/২০২২)। গত ২৪ জুলাই আদালতের নির্দেশে কেশবপুর থানাধীন ভেরচি ফাঁড়ি ইনচার্জ মইনুল ইসলাম বিরোধীয় জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আগামী ২৭ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য করা হয়েছে বলে বাদীর আইনজীবী যুথিকা ঘোষ জানান।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বোরহান উদ্দিন বলেন, ভাটাটি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়ায় বর্তমান এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ভাটার জমিতে মাছের ঘেরের ভেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধে আদালতের নির্দেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।