সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বৃহস্পতিবার , ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
কোরআনের অনিন্দ্য শিক্ষা প্রচারের বিকল্প নেই | চ্যানেল খুলনা

কোরআনের অনিন্দ্য শিক্ষা প্রচারের বিকল্প নেই

পবিত্র কোরআন শান্তির শিক্ষা দেয়। এ কথা শতভাগ সত্য যে কোরআনের শিক্ষার ওপর আমল করলে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

তাই পবিত্র কোরআনের অনিন্দ্য শিক্ষার প্রচার ও প্রসার একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। পবিত্র কোরআনের অতুলনীয় শিক্ষা, মহানবী (সা.)-এর পবিত্র জীবনাদর্শ তুলে ধরার লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

পৃথিবীতে পুনরায় শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত করতে হলে পবিত্র কোরআনের শিক্ষার ওপর আমল করতেই হবে।

আজ পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সর্বত্রই ভয়-ভীতি আর অশান্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে। অস্ত্র-শস্ত্র এবং মানুষকে ধংস করে দেয়ার অস্ত্র ও মাধ্যম সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে।
একজন মানুষ অন্যজনের শত্রু বনে বসে আছে। শক্তিশালী জাতি তার চেয়ে তুলনামূলক দুর্বল জাতির ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাস দমনের নামে বৃহৎ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হচ্ছে।

এরপর মিডিয়াও ভীতি আর অশান্তির আবহ সৃষ্টির ক্ষেত্রে কোন ত্রুটি করছে না। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের একটিই পথ আর তা হলো, পবিত্র কোরআনের শিক্ষার ওপর আমল আর মুসলমানরা যেন নিজেদের আমলের মাধ্যমে ইসলামকে বদনাম করা ছেড়ে দেয়।

তারা যেন ইসলামের প্রকৃত শিক্ষায় আমল করে এবং পরস্পর ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়।

নিজেদের মাঝে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সর্বত্র পবিত্র কোরআনের সুন্দর শিক্ষা প্রচারে রত হতে হবে। আমরা যদি নিজেদেরকে পবিত্র কোরআনে আলোয় আলোকিত করি এবং প্রত্যেকটি কর্ম এর শিক্ষা অনুযায়ী পরিচালনা করি তাহলেই সমাজ ও দেশ পরিবর্তন হতে বাধ্য।

মানুষ দলে দলে কোরআনের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হবে। কেননা বিশ্বের শান্তি কেবলমাত্র প্রকৃত ইসলামের সাথেই সম্পৃক্ত।

বর্তমান বিশ্ব যেসব বড় বড় সমস্যায় জর্জরিত এসব সমস্যা যদি এক বাক্যে বলতে হয় তাহলে বলতে হবে শান্তি উঠে যাওয়া আর এটি নিরসনে আজ পর্যন্ত যত চেষ্টা-প্রচেষ্টা করা হয়েছে তা বাহ্যত সবই ব্যর্থ হয়েছে।

জাতিসংঘ ব্যর্থ হয়েছে আর এখন তাদেরকে পর্যদুস্ত মনে হচ্ছে। পুরো মানবজাতি আজ অস্থির যে, তাদেরকে কখন, কোথা থেকে এবং কীভাবে শান্তি নামের অমূল্য সম্পদ জুটবে।

হ্যাঁ, পুরো বিশ্বে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে কিন্তু তা কেবল পবিত্র কোরআনে উপস্থাপিত শিক্ষামালা অবলম্বনের মাধ্যমে।

কোরআন মজিদ আল্লাহতায়ালার সেই পবিত্র বাণী যা রহমান ও রহীম আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন।
আর এটি এক পূর্ণাঙ্গীন ও পরিপূর্ণ এবং স্থায়ী শরীয়ত হিসাবে অবতীর্ণ হয়েছে, যে বিষয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে এক নূর এবং উজ্জ্বল কিতাবও। এর মাধ্যমে আল্লাহ সেসব লোককে শান্তির পথে পরিচালিত করেন, যারা তার সন্তুষ্টির পথে চলে। আর তিনি নিজ আদেশে তাদেরকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান এবং সরলসুদৃঢ় পথে তাদের পরিচালিত করেন’ (সুরা মায়েদা: ১৫-১৬)।

মহানবীর (সা.) কল্যাণমণ্ডিত পুরো জীবন এ বিষয়ের জীবন্ত সাক্ষি, তিনি শান্তি ও নিরাপত্তার এক মহান মূর্তিমান প্রতিক হিসাবে জীবন যাপন করেছেন এবং চরম প্রতিকূল ও কঠিন পরিস্থিতিতেও শান্তির পতাকা উঁচু রেখে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, কোরআনি শিক্ষামালার ওপর আমল করলে পরেই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

তার মক্কী জীবনী এবং মাদানী যুগেও তার পুরো জীবনাদর্শ এমনসব ঘটনাবলীতে পরিপূর্ণ যে, কীভাবে তিনি (সা.) তার মান্যকারীদেরকে কোরআনের শিক্ষামালার কল্যাণে শান্তির মূর্তিমান প্রতিক বানিয়ে দিয়েছিলেন।

যুদ্ধ ক্ষেত্রেও তিনি মুসলমানদের সামনে এক পরম সহানুভূতিপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ উত্তম নৈতিক আদর্শ উপস্থাপন করেছেন।

যুদ্ধের নাম নিলেই তো বর্তমান যুগের নাম সর্বস্ব সভ্য দেশগুলো নম্রতা, নৈতিক আচরণ, সহমর্মিতা এবং ন্যায়বিচারের সকল দাবি সম্পূর্ণভাবে ভুলে যায় কিন্তু বিশ্বশান্তির মহানায়ক হজরত মুহাম্মদ (সা.) যুদ্ধ এবং হানাহানির ক্ষেত্রসমূহে শান্তি ও নিরাপত্তার উন্নত মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করে এমন অতুলনীয় আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছেন যা সকল যুগে পুরো মানবজাতির জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে।

মক্কা বিজয়ের দৃষ্টান্ত এ বিষয়ে স্পষ্ট সাক্ষি। তার সকল খুনি শত্রুদের ক্ষমা করে বিশ্ব ইতিহাসে সেই দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেছেন যা কিয়ামত পর্যন্ত এর কোন উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বিভিন্ন চুক্তি পালনের ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) সর্বদা এমন আদর্শ দেখিয়েছেন যার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

শান্তির অভিযাত্রা এক ব্যক্তি সত্তা থেকে শুরু হয়। এর বীজ মূলত সবচেয়ে প্রথমে মানুষের হৃদয়ে বপন করা হয়। এটি যখন বর্ধিত হয় তখন সেই ব্যক্তির পরিবার শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করে।
এরপর এটি পারিবারিক জীবনকে ছাড়িয়ে শান্তির এই কল্যাণ সমাজে এবং চারপাশে বিস্তার লাভ করে। এর পরবর্তী ধাপ জাতীয় শান্তি ও নিরাপত্তা হয়ে থাকে যা অবশেষে আন্তর্জাতিক শান্তির রূপ ধারণ করে নেয়।

এটি কোন ধারণাপ্রসূত ও কাল্পনিক ফরমুলা নয় বরং এটি এমনই সত্য যার প্রকাশ পুরো বিশ্বে দৃষ্টিগোচর হয়। কোরআন মজীদ শান্তির বীজ হিসাবে আল্লাহতায়ালার অস্তিত্বে পূর্ণ ঈমান আনাকে উপস্থাপন করেছে।

এর স্পষ্ট প্রমাণ হলো, যারা আল্লাহতায়ালার অস্তিত্বে জীবন্ত ঈমান রাখে তারা কখনও অস্থিরতা বা মানসিক চাপের ততটুকু শিকার হয় না যাতে নিজের জীবন সম্পর্কেই নিরাশ হয়ে যেতে হয়।

আমরা দেখি সেসব মনোনীত ব্যক্তি যাদেরকে আল্লাহতায়ালা নিজে বেছে নিয়ে নবুয়্যতের মর্যাদায় ভুষিত করেন তাদের হৃদয়ে এমন শান্তি ও প্রশান্তি ভরে দেন যে, পার্থিব জগতের শত বিরোধিতা এবং বিপদাপদের ঝড়-তুফান সত্বেও তারা সর্বদা আল্লাহতায়ালার আঁচলের সাথে সম্পৃক্ত থাকার ফলে শান্তি ও নিরাপত্তার জান্নাতে জীবন কাটান।

পৃথিবীর ইতিহাসে একজন নবীও এমন অতিবাহিত হননি যিনি পরিস্থিতির শিকার হয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাদের হৃদয় সর্বদাস্থায়ী শান্তি ও স্বস্তির আবাসস্থল হয়ে থাকে।

তাদের হৃদয়কে আল্লাহতায়ালার প্রতি তাদের দৃঢ় বিশ্বাস এবং তার স্মরণ সর্বদা আলোকিত রাখে।

প্রকৃতপক্ষে, হৃদয়ে যদি আল্লাহতায়ালার অস্তিত্ব সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকে এবং দৃঢ় বিশ্বাস সৃষ্টি হয়ে যায় তাহলে এটিই সেই ব্যবস্থাপত্র যা বিশ্ব শান্তির নিশ্চিত ও সত্যিকার মাধ্যম।

এই মূলনীতি পাশাপাশি পবিত্র কোরআন বলে, শান্তি ও নিরাপত্তার অভিযাত্রা পরিবার থেকে শুরু হয়। পরিবারগুলোকে শান্তির নীড়ে পরিণত করার জন্য এবং জান্নাত সদৃশ বানানোর জন্য পবিত্র কোরআন পূর্ণাঙ্গীণ শিক্ষামালা উপস্থাপন করেছে।

পবিত্র কোরআনের ভিত্তিতে গড়ে উঠা সমাজ জাতীয় শান্তি ও নিরাপত্তার জামিনদার হয়ে যায় এবং অবশেষে যদি বিশ্বের সকল রাষ্ট্র নিজ নিজ স্বার্থের উর্ধে গিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এসব মূলনীতিতে সংঘবদ্ধ হয়ে যায় এবং কোরআনি শিক্ষামালাকে পথ-নির্দেশক বানিয়ে এসব মূলনীতি বাস্তাবায়ন করে তাহলে দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলা যায়, বিশ্বশান্তি পুরো বিশ্বের ভাগ্যে অবশ্যই জুটবে।

মহানবীর (সা.) উম্মত হিসেবে আমাদের প্রত্যেককে একেকজন প্রচারক হিসেবে কাজ করতে হবে। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা, কোরআনের অনিন্দ্য শিক্ষা সবার সামনে তুলে ধরতে হবে।

এক্ষেত্রে আমাদের আলেমগণ বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। ধর্মীয় সভাগুলোতে আমরা যদি নিজেদের মধ্যকার বিরোধ ও পরস্পরবিরোধী কথাবার্তা বন্ধ করে কোরআনের শিক্ষা তুলে ধরে বয়ান করি তাহলে হয়তো আমাদের যুব সমাজ কোরআনের আলোয় নিজের জীবন পরিচালনার চেষ্টা করবে আর তাদের দ্বারা হয়তো নিকৃষ্ট কাজ করা বন্ধ হবে।

তাই আসুন, নিজেদের মধ্যে দলাদলি বন্ধ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কোরআনের শিক্ষা বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার অঙ্গীকারাবদ্ধ হই।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট

https://channelkhulna.tv/

আজকের টপিক্স আরও সংবাদ

প্রকৃত আলেম জাতির পথ প্রদর্শক

মিথ্যাবাদীর ইবাদত আল্লাহর দরবারে মূল্যহীন

নির্ধারিত সময় এলেই ভ্যাকসিন নেব: অর্থমন্ত্রী

বিদ্রুপকারীদের ভ্যাকসিন দিয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ দিতে চান মন্ত্রী

পৃথিবী নিয়ে কোরআনের বিস্ময়কর পাঁচ তথ্য

‘আপনি নিজের আত্মা বিক্রি করেছেন’

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
উপদেষ্টা সম্পাদক: এস এম নুর হাসান জনি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: শেখ মশিউর রহমান
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
ঢাকা অফিসঃ ৬৬৪/এ, খিলগাও, ঢাকা-১২১৯।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির জন্য আবেদিত।