পিরোজপুর প্রতিনিধি :: ছারছীনা শরীফের পীর শাহ মোহাম্মদ মোহেবুল্লাহ বলেছেন, খাঁটি মুসলমান হতে ইসলামী আদলে জীবন গড়ার বিকল্প নাই। ইসলামের সকল হুকুম আহকাম মেনে চলতে হবে। মুসলমান দাবী করবেন আর ইসলামের আদেশ নির্দেশ মানবেন না তা কি করে সম্ভব। কোরাআন সুন্নাহ’র আদলে জীবন গড়তে হবে। ইহকালের শান শওকত নিয়ে পড়ে থাকবেন, নামাজ রোজার ধার ধারবেন না, আর মুসলমান দাবী করবেন তা হতে পারে না। আমরা রাজনীতি করিনা। সরকারের কাজ আমরা সমর্থন করি। তিনি উত্থাপন করা দাবীর প্রতি সমর্থন করে বলেন, যে যার ধর্ম পালন করবেন তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু মুসলমান দাবী করে অনৈইসলামিক কাজ করবেন তা হবে না। মুসলমান দাবী করলে কোরআন সুন্নাহর আদলে কাজ করতে হবে। তিনি আজ মঙ্গলবার জোহর নামাজ বাদ তিনদিন ব্যাপী ১৩৩ তম বার্ষিক ইছালে সওয়াব মাহফিলের আখেরী মোনাজাত পূর্ব তার বয়ানে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার মো. সামসুল হক টুকু বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম । বাংলাদেশে বেশির ভাগ মানুষ মুসলমান। বিভিন্ন সময় ইসলামের নামে জঙ্গি সংগঠন করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। দেশের রাষ্ট্রপতি, একটি জাতির প্রতিষ্ঠাতা, জাতির জনককে তার পরিবারসহ হত্যা করা হয়েছে। তারা ইসলামের নামে মানুষ হত্যা করেছে যা কোন হাদিস কোরাআনে নেই। তারা বিভিন্ন সময় ইসলামী স্লোগান তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। কিন্তু ছারছীনা দরবার সত্যিকারের ইসলাম প্রচারে কাজ করছে যে কারনে আমরা বারবার এ দরবারে আসি।
মৎস্য ও প্রানী সম্পদমন্ত্রী শম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, দুনিয়ায় শান্তি স্থাপন করতে ইসলামের বিকল্প নাই। ইসলাম জঙ্গিবাদকে সমর্থন করেনা। বিশেষ করে এ ছারছীনা দরবার জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। এখানে সঠিক ইসলামী শিক্ষা দেওয়া হয়। এ এলাকার এমপি হিসেবে, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে আপনাদের আশ্বস্থ করতে চাই বর্তমান সরকার আমলে ইসলাম বিরোধী কোন আইন প্রনয়ন করা হয়নি ভবিষ্যতেও হবে না ইনশাল্লাহ।
এসময় আরো বক্তৃতা করেন সাবেক সংসদ সদস্য পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল, দশমিনা ও গলাচিপা আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহাজাদা খান, আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। এসময় পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মো. পীর সাহেবের বড় জামাতা মাওলানা নুরুর রহমান বেগ। উপস্থিত ছিলেন ইউএনও মো. জাহেদুর রহমান, পুলিশ সুপার মো.সাইদুর রহমান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক, পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম কবির, উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক এস এম মুইদুল ইসলাম প্রমুখ।
মোনাজাতের পূর্বে পীর সাহেবের বড় ছেলে আলহাজ্ব মাওলানা আবু নসর নেছার উদ্দিন হোসাইন আহম্মেদ জমিয়তে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে ইসলামের পরিপন্থি লেখা থাকায় দুটি বই বাতিল করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে কিছু দাবী উপস্থান করেন। এর মধ্যে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষনা করা, এখনো পাঠ্য পুস্তকে বিতর্কিত বিষয় বাদ দিতে হবে। এসএসসি ও এইচএসসিতে ধর্ম বিষয় বাধ্যতা মুলক করতে হবে।
সব শেষে দেশ ও মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করে আখেরী মোনাজান পরিচালনা করেন ছারছীনা শরীফের পীর শাহ মোহাম্মদ মোহেবুল্লাহ। লাখ লাখ মানুষের কান্নার রোল পড়ে যায় গোটা মাহফিলে। তিনদিন ব্যাপী ওই মাহফিলে দেশের খ্যাতনামা আলেম ওলামাগন লাগাতার ভাবে ওয়াজ নসিহত করেন।