করোনাভাইরাসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তার বাসাতেই হবে। বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন সিটি স্ক্যান শেষে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরার পর চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানান।
এর আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাসায় হবে, নাকি হাসপাতালে হবে—এই সিদ্ধান্ত সিটি স্ক্যানের পর নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা।
সিটি স্ক্যানের পর অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ সাংবাদিকদের বলেন,’অনেক অনেক ভালো উনার রিপোর্টটি। রিপোর্টে ফাইন্ডিংস আছে সেটাকে ক্লিনিক্যালি আমরা মনে করতে পারি যে এটি অত্যন্ত মিনিমাম। তার জন্য যে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন এখন তা বাসায় থেকেই দেওয়া হবে।’
এক্ষেত্রে ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানসহ বিদেশের চিকিৎসকদের আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান পরীক্ষার ফাইনাল রিপোর্ট শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) পাওয়া যাবে বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাত সোয়া ৯টার দিকে সিটি স্ক্যান পরীক্ষার জন্য বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে যান খালেদা জিয়া। হাসপাতালে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সব সদস্যরা ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, ‘সব কটি রিপোর্টই হয়েছে, শুধু সিটি স্ক্যানটা করানো হচ্ছিল না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো একসময় সিটি স্ক্যান করিয়ে ফেলব। এ ছাড়া আর সব মোটামুটি ভালো আছে।’
গত শনিবার খালেদা জিয়া পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ওই দিন রাতেই জানা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
পরদিন রবিবার প্রথমে বিএনপির পক্ষ থেকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করা না হলেও দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার পজিটিভ রিপোর্ট ভাইরাল হয়। পরে একইদিনে বিকেলে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল চেয়ারপারসনের করোনা পজিটিভের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।
শুরু থেকেই চিকিৎসক এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা চিকিৎসা শুরু করেন। পরে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়া ছাড়াও তার বাসভবনের আট সদস্য করোনাক্রান্ত হয়েছেন।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়।
তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তার সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ সীমিত।