বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে বাণী অর্চনা (সরস্বতী পূজা) অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষ্যে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় মন্দির প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অসাম্প্রদায়িকতার অনন্য উদাহরণ। বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান অর্জনের জায়গা। জ্ঞান মানুষকে আলোকিত করে। বাণী অর্চনার অন্তর্নিহিত শক্তি মানুষকে আলোকিত করা। বাণী অর্চনার মাধ্যমে জ্ঞানের সাধন করা হয়। জ্ঞানচর্চাই এখানে মুখ্য আরাধ্য। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সম্প্রীতি ধরে রেখে সামনের দিকে এগোতে হবে এবং এই দৃষ্টান্ত দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ুক- এ প্রত্যাশা করি। তিনি সুষ্ঠুভাবে এ আয়োজন সম্পন্ন করায় উদযাপন কমিটিকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে উপাচার্য বাণী অর্চনা উদযাপন কমিটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের মাধ্যমে প্রকাশিত স্মরণিকা ‘পঞ্চমী’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, বাণী অর্চনা ও পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বাইরের অনেক দর্শণার্থী এসেছেন। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রীতির চেহারা উদ্ভাসিত হয়েছে। রাষ্ট্রের পাশাপাশি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে সরস্বতী পূজা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে। এটি এখন বাঙালি সংস্কৃতির অঙ্গে পরিণত হয়েছে। তিনি মন্দিরকে সুসজ্জিত করার পাশাপাশি একজন স্থায়ী পুরোহিত নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
বাণী অর্চনা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. উত্তম কুমার মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন ছাত্র বিষয়ক পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকী, মন্দির কমিটির সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. রামেশ্বর দেবনাথ, শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. তরুণ কান্তি বোস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উপ-রেজিস্ট্রার দীপক চন্দ্র মন্ডল।
এ সময় চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ, ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের প্রফেসরড. সমীর কুমার সাধু, সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. তুহিন রায়সহ বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণী অর্চনা পালিত হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিলো- সকাল ৮টায় মন্দিরে প্রতিমা স্থাপন, সকাল ৯টায় দেবীর আমন্ত্রণ, সকাল ১০টায় পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন, সকাল ১১.৩০ মিনিটে প্রসাদ বিতরণ এবং বিকেল ৫টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।