খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ)’র আওতায় আবশ্যকীয় কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহের বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেবাপ্রদান প্রতিশ্রুতি (সিটিজেন চার্টার) ও অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা (জিআরএস) বিষয়ে রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের কনফারেন্স রুমে এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ। সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য বলেন, যুগোপযোগী শিক্ষাদান পদ্ধতির পাশাপাশি সেবাপ্রদানের ক্ষেত্রেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যথেষ্ট আন্তরিক। ডায়নামিক উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এর নেতৃত্বে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানের জায়গা করে নিয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ এর পথচলা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের সবকিছুই হবে স্মার্ট ও প্রযুক্তি নির্ভর। তবে এর সাথে হার্ডকপিও থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নাগরিক সেবা প্রদান ও অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা বিষয়ে ধারণার পরিবর্তন করতে হবে। যারা এখানে চাকরি করেন, তাদেরও সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের উদ্বুদ্ব করতে হবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে যাতে গবেষণা প্রকল্প পাওয়া যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। সর্বোপরি তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো অঞ্চলভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, আমরা নিজেদের বিশ্বের বুকে মেলে ধরতে চাই। রিসার্চ ফোকাসড এবং স্মার্ট ইউনিভার্সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, সময়ের সাথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণার মানোন্নয়ন হচ্ছে। রিসার্চ ইনডোমেন্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে। এবছর সর্বোচ্চ ১৭৯জন শিক্ষার্থী এনএসটি ফেলোশিপ পেয়েছে। জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধের সংখ্যা আশানুরূপ হারে বেড়েছে। স্মার্ট কার্ড চালু করা হয়েছে। যার মাধ্যমে লাইব্রেরি অটোমেশন সুবিধা, মেডিকেল সেবা পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে পরিবহন ব্যবস্থাও এই কার্ডে অন্তর্ভুক্ত হবে। বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিবর্গ যাতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণালব্ধ বিষয়ে সহজভাবে সহজ ভাষায় জানতে পারে এ জন্য জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগে ইনফরমেশন ডেস্ক করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও রেজাল্ট প্রকাশ অনলাইনে করা হচ্ছে। একটি স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে যে সব বিষয় বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন তার অনেকই বাস্তবায়ন হয়েছে এবং বাকি বিষয়গুলো বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎকর্ষ সাধনে সবসময় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করায় বাংলাদেশ সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসির প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী, ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও এপিএ কমিটির সভাপতি প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত কমিটির ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা উপ-রেজিস্ট্রার দীপক চন্দ্র মন্ডল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর টেকনিক্যাল সেশনে রিসোর্স পারসন হিসেবে সেবাপ্রদান প্রতিশ্রুতি ও অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা বিষয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন ইউজিসির সিটিজেন চার্টার বিষয়ক ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল আলীম, ইউজিসির অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা বিষয়ক ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মৌলি আজাদ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটিজেন চার্টার বিষয়ক ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন ও এপিএ টিমের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা উপ-রেজিস্ট্রার এস এস আবু নাসের ফারুক। এ প্রশিক্ষণে সকল ডিন অফিস, ডিসিপ্লিন, হল, দপ্তর, বিভাগ, শাখা থেকে একজন করে কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। এসময় এপিএ, সিটিজেন চার্টার, ই-গভর্ন্যান্স, তথ্য অধিকার, জিআরএস কমিটির সংশ্লিষ্ট ফোকাল পয়েন্ট ও বিকল্প ফোকাল পয়েন্টবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।