খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী হরিজনরা বেতন না পাওয়ায় হাসপাতালে মানুষের মল ছিটিয়ে ধর্মঘট করেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে হাসপাতালের প্রায় সকল ইউনিট ও পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে মানুষের মল ছিটিয়ে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ধর্মঘট শুরু করে।
হরিজনরা জানান, গত ৫ মাস ধরে হাসপাতাল থেকে কোনো প্রকার বেতন-ভাতা না দেওয়ার কারণে তারা এ ধর্মঘট শুরু করেছে। ধর্মঘট চলাকালে তারা মানুষের মল বালতি ভরে হাসপাতালে ছিটানো শুরু করে। প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ কক্ষের সামনে, প্রধান ফটকের সামনে, রোগী ভর্তি করার অফিসের সামনে, রোগীদের থাকার ওয়ার্ড ও পরিচালকের কক্ষের সামনে মল ছিটায়। সেই মল ঝাড়ু দিয়ে ছড়িয়ে দেয়। পরে বিকাল ৫টার দিকে তারা হাসপাতাল ত্যাগ করে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, খুমেক হাসপাতালে গত ১১ মাস ধরে ৪৫ জন হরিজন আউটসোর্সিং কর্মচারী হিসেবে কাজ করছে। প্রথম ৬ মাস বেতন পেলেও গত ৫ মাস ধরে তারা কোনো বেতন পাননি। করোনাকালে সরকারের সিদ্ধান্তে তাদের নিয়োগ করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই সময় সরকারের পক্ষ থেকে ৬ মাসের বেতন দেওয়া হয়েছিল। তবে হাসপাতালে তাদের প্রয়োজন থাকায় কর্তৃপক্ষ তাদের রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
ধর্মঘটকারীরা জানান, হাসপাতালে বর্তমানে হরিজন সম্প্রদায়ের বাইরেও তিন শতাধিক আউটসোর্সিং কর্মচারী আছে। তাদের বেতনের একটি অংশ কেটে রেখে হরিজনদের বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
আন্দোলনকারী বিধান হরিজন বলেন, গত ৫ মাস ধরে আমরা শুধু কাজই করে যাচ্ছি। আমাদের কোনো বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ শুধু আশ্বাস দিয়েই আমাদের কাজ করাচ্ছেন। অবশেষে আমরা ধর্মঘট করতে বাধ্য হয়েছি।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ রবিউল ইসলাম জানান, হরিজনদের বেতন বাকি থাকায় তারা ময়লা ফেলে চলে যায়। পরে হাসপাতালের স্থায়ী ক্লিনারদের দিয়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের পাওনা পরিশোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।