করোনা মহামারীতে টানা তিন মাসের ও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আস্তে আস্তে খুলছে নগরীর রেস্টুরেন্ট ও ফুডকোর্ট গুলো। সরকারের নির্দেশনা মেনে মে থেকে জুন মাস পুরো বন্ধের পর স্বাস্থ্যবিধি স্বল্পপরিসরে মেনে খুলতে শুরু করেছপ রেস্টুরেন্ট ও ফুডকোর্ট গুলো। তবে বেচা কেনা জমেছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অর্ধেকে। ফলে লোকসানে পড়ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। লোকসান কমাতে ছাটাই হচ্ছে কর্মচারী বন্ধ হচ্ছে প্রতিষ্ঠান। সরকারি প্রনোদনা ও সহযোগিতা চান ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হওয়ার পর মার্চের ২০ তারীখে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বন্ধ হয়ে যায় নগরীর সোনাডাঙ্গায় অবস্থিত খুলনা কনভেনশন এন্ড লেট নাইট রেস্টুরেন্ট। দীর্ঘ ০৬ মাস বন্ধ থাকার পর ০১ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ১৮০ জন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন রেস্টুরেন্টটিতে আসন সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে ৫০ জনে।
প্রতিষ্ঠানটির মালিক পক্ষের একজন মশিউর রহমান সুমন জানান, বন্ধ থাকার কারনে তাদের প্রতি মাসে ৯৫ থেকে ৯৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। বাদ দিতে হয়েছে কিছু কর্মচারী। প্রতিষ্ঠানের আয় আন্ধ থাকলেও কর্মচারীদের বেতন সহ অন্যান্য খরচ চালিয়ে যেতে হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানটি আবার চালু করা হয়েছে। এখানে ক্রেতারা প্রবেশ করার পর তাদের স্যানিটাইজেশনের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। সমাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সর্বোত্তম ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অনলাইনেও খাবার অর্ডার ও পার্সেল নেওয়ারও সুযোগ আছে। এছাড়াও আমাদের কিচেন, কাউন্টার সহ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনেচলা বাধ্যতা মূলক করা হয়েছে। নিয়মিত পরিস্কার করা হয় জীবানু নাশক দিয়ে মেঝে ও আসবাবপত্র। এমনকি আমরা আমাদের খাবার এক কাঁচামাল সংগ্রহ ও তৈরীতেও বিষয়টি সতর্কতার সাথে দেখছি।
তরুন এই উদ্যোক্ত আরো বলেন, সময়ের সাথে সাথে মানুষ বাইরে বের হলেও সেটি আগের মতন নয়। ফলে বেচাকেনা কমছে। সরকারের উচিত হবে আমাদের জন্য সহযোগিতা বা প্রনোদনার আওতায় আনা। যাতে করে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ না হয় ও মানুষ বেকার না হয়।
নগরীর ময়লাপোতা এলাকার শর্মা হাউজের খুলনা শাখার মালিক পক্ষের একজন আতাহার আলী বলেন, মার্চ, এপ্রিল ও মে তিন মাস বন্ধ থাকার পর রোজার মাস থেকে শুধুমাত্র পার্সেল বিক্রি ও অনলাইনে ডেলিভারি দিয়েছেন তারা। বর্তমানে ১৩০ জনের স্থলে মাত্র ১৫ জনের বসার ব্যাবস্থা করে দ্বিতীয় ফ্লোর বন্ধ করে শুধুমাত্র নিচের ফ্লোরে চলছে বেচা কেনা। ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেচা কেনা কমেছে ৭০ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন বন্ধের তিন মাস তারা তাদের কর্মচারীদের অর্ধেক বেতন দিয়ে লে অফে রাখছিলেন। বাকি অর্ধেক চালু হওয়ার পর এখন পরিশোধ করা হচ্ছে এক এক করে।
তিনি বলেন, মানবিক কারনে কর্মী ছাটাই দেওয়া হচ্ছে না, স্বাস্থ্যবিধি মানতে গিয়ে ব্যবসা স্বল্প পরিসরে করলেও খরচ রয়েছে আগের মত। ফলে লোকসান বাড়ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরনে মহামারী মোকাবেলায় সরকারের সহযোগিতা চান তিনিও।
বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর থেকে খারাপ অবস্থা নগরীর অলিগলির ছোট ছোট রেস্টুরেন্ট গুলোর। লোকসানে লোকসানে বন্ধ হওয়ার উপক্রম তাদের। নগরীতে ছোট বড় মিলিয়ে ১০০ এর অধিক ছোট বড় রেস্টুরেন্ট ও ফুডকোর্ট রয়েছে।