ভারতের একটি টেলিভিশনের অপরাধ বিষয়ক সিরিজ ‘ক্রাইম প্যাট্রোল’ দেখে দ্রুত টাকা আয়ের জন্য খুলনার ডুমুরিয়ার কয়েক কিশোর মিলে এক স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে পাঁচ কিশোরকে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাত ১টার দিকে উপজেলার গুটুদিয়া এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের শিকার নিরব মণ্ডল গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ১৩ বছরের এ কিশোর গুটুদিয়া পূর্বপাড়ার পান-সুপারি ব্যবসায়ী শেখর মণ্ডলের ছেলে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচ কিশোরকে আটক করা হয়েছে। তারা হলো- গুটুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহেল মোল্যা (১৫), জেলেরডাঙ্গা গ্রামের পংকজ মণ্ডলের ছেলে পিতু মণ্ডল (১৫),
গুটুদিয়া গ্রামের প্রকাশ রায়ের ছেলে হিরক রায় (১৫), ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ওই এলাকার ক্ষিতিশ রায়ের ছেলে দ্বীপ রায় (১২) এবং ১০ম শ্রেণির ছাত্র উপজেলার তেলিগাতি গ্রামের অনিমেশ কবিরাজের ছেলে পিয়াল মণ্ডল (১৫)। তাদের বয়স ১২ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও নিরবের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ দাবি করে, বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর নিরবকে ডেকে স্কুলের পেছনে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে নিরবের বাবার কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা।
বিষয়টি শেখর মণ্ডল পুলিশকে জানান। পুলিশের ধারণা, এর কিছু পরেই নিরবকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এবং পরে তার মরদেহ স্কুল ঘরে এনে সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
পুলিশ রাতেই মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিং করে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কিশোরদের আটক করে, পরে তথ্য অনুযায়ী মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার সকালে ডুমুরিয়া থানার ওসি শেখ কনি মিয়া বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানিয়েছে, ক্রাইম পেট্রোল দেখে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা আয়ের পরিকল্পনা করেছিল তারা।’
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
দুই দশকের অধিক সময় ধরে চলা ভারতের একটি টেলিভিশন সিরিজ ‘ক্রাইম পেট্রোল’। অপরাধ বিষয়ক বিভিন্ন সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি সিরিজটি হিন্দি ভাষায় তৈরি। বাংলা ডাবিংয়ের কারণে অন্য অনেক সিরিজের মতো এটিও বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়।