খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সামনে অবস্থিত গারদখানায় দুটি সিসি ক্যামেরা ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ এবং হাজতির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্দ হাজতির মারধরে ওই হাজতখানার এটিএসআই শুভংকর সাহা ওরফে শুভ (৫০) গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তাকে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনার পর পরই আদালতে চত্বরের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হাজতখানা থেকে আসামিরা এডিসি হুমায়ুনের পদত্যাগে স্লোগান দিতে থাকে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এডিসি কোট (প্রসিকিউশন) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বেলা ১১টার দিকে ওই হাজতখানার মধ্যে তিনজন আসামি ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। অপরজন সোনাডাঙ্গা থানার ডাকাতি মামলার আসামি। ৪১ শিপইয়ার্ড মেইন রোড মতিয়াখালী লবণচরা এলাকার বাসিন্দা ইউনুস শেখের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম রাজ ওরফে রাজউজ্জামান রাজু ওরফে গলাকাটা রাজু। তিনি মূলত এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটান। তার নেতৃত্বে তিন আসামি প্রথমে হাজতখানার দুটি ক্যামেরার ক্যাবল সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং পরে তা ভাঙচুর করে। জানতে পেরে এটিএসআই শুভংকর ওই তিন আসামির কাছে বিষয়টি জানতে চায়। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ৩ আসমি তাকে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে তাদের আঘাতে এটিএসআই’র মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ওই তিন আসামি হাজতখানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের তৎপরতার কারণে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে পারেনি। সংবাদ জেনে আদালত চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়। তবে এ ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী এবং অতিরিক্ত পিপি হুমায়ুন কবির উজ্জ্বল বলেন, হাজতখানার আসামিরা এডিসি প্রসিকিউশনকে উদ্দেশ্যে করে অকথ্য ভাষায় গলিগালাজ করতে থাকে। এক কথায় এখানে তাদের চিৎকারে আদালত চত্বরে অনেক লোক জড়ো হয়ে যায়। এরমধ্যে দেখা যায় আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য শুভংকরকে হাসপাতালে নিয়ে যায় কিছু পুলিশ। তবে আদালত চত্বরে এ ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েত করা হয়েছে। তবে কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত তা তিনি পরিস্কার করে বলতে পারেননি।