চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ খুলনায় প্রাইম ব্যাংক কর্মকর্তা কর্তৃক কাচের জগের আঘাতে জাহিদুল ইসলাম আজাদ নামে এক ঋণ গ্রহীতা লাঞ্ছিত ও জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত জাহিদুলকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ খুলনা প্রাইম ব্যাংকের ৪ কর্মকর্তাকে আটক করেছে।বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটার দিনে মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার মোল্লাবাড়ি এলাকার বিসমিল্লাহ মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রগতি ফিস ফিডের স্বত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম আজাদ বলেন, আমার মা গত দুই মাস ধরে অসুস্থ, খুলনা সিটি মেডিকেল ও আবু নাসের হাসপাতলে আই সি ইউ তে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে অক্সিজেন দেওয়া অবস্থায় আছেন। মায়ের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় আমি আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ি। আমার প্রাইম ব্যাংকে ১৫ লক্ষ টাকার এফডিআর আছে। আমি গতবছর প্রাইম ব্যাংক থেকে ৫০ লক্ষ টাকা লোন করি যাহা ৪৮ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। বর্তমানে আমি ১৪ কিস্তি পরিশোধ করিয়েছি, কিস্তি পরিশোধের জন্য আমাকে কিছুদিন সময় দেন। আজ হঠাৎ ব্যাংক কর্মকর্তারা কোন প্রকার কথা না শুনে আমার বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, গালাগালি না করে আমার নামে মামলা বা আইনি পদক্ষেপ নেন। কিন্তু গালাগালি দিবেন না ।
এমতাবস্থায় আমার অসুস্থ মা ব্যাংক কর্মকর্তাদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করলে, তাঁকেও গালাগালি করেন। তখন মাকে গালাগালি করতে বারবার নিষেধ করা সত্বেও তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ব্যাংক কর্মকর্তা তাকে অতর্কিতভাবে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও টেবিলে থাকা কাচের জগ দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে এবং তার বাম চোখ মারাত্মক ভাবে অাঘাত প্রাপ্ত হয় এবং মাথা ফেটে যায়।
এ সময় চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন এসে জড়ো হয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ধরে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেন।আটক কর্মকর্তারা হলেন, প্রাইম ব্যাংক খুলনার লোন শাখার ম্যানেজর গাজী সালাহ উদ্দিন, কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর, বদরুজ্জামান ও পলাশ সাহা।
সোনাডাঙ্গা থানার এসআই শক্তিপদ মৃধা জানান, ঋণ গ্রহীতাকে কাচের জগ দিয়ে আঘাত করার অভিযোগে চার ব্যাংক কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। ঋণ গ্রহীতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটক চার ব্যাংক কর্মকর্তাকে ফাঁড়ি থেকে থানায় আনা হয় পরে থানা থেকে তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
এদিকে ব্যাংক সূত্র জানায়, বিসমিল্লাহ মহল্লা এলাকার বাসিন্দা মৃত শাহজাহানের ছেলে প্রগতি ফিস লিমিটেডের কর্ণধার জাহিদুল ইসলাম আজাদ ওরফে মুন্না (৩৬) প্রাইম ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ নেন। কিন্তু তিনি ঋণের কিস্তি দিতে গড়িমসি করে আসছিলেন। বুধবার সকালে প্রাইম ব্যাংক খুলনার লোন শাখার ম্যানেজর গাজী সালাহ উদ্দিনসহ ওই ৪ কর্মকর্তা কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য জাহিদুলের বাড়িতে যান। সেখানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জাহিদুল অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এসময় এলাকাবাসী চার ব্যাংক কর্মকর্তাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
জাহিদুল ইসলাম আজাদ মুন্নাকে পুলিশের সহায়তায় জরুরিভাবে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথায় চারটা সেলাই লাগে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।