নদীর পানির স্তর থেকে সেতুর উচ্চতা প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ায় খুলনা শহরের প্রবেশদ্বার গল্লামারী এলাকায় ময়ূর নদীর ওপর নতুন ও পুরোনো দুটি ব্রিজই ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সড়ক বিভাগ। এর মধ্যে নতুন ব্রিজটি মাত্র সাত বছর আগে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। এই দুটি ব্রিজ ভেঙে রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে দৃষ্টিনন্দন আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে এ সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহামুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ), খুলনার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী।
উদ্বোধনকালে এমপি সালাহউদ্দিন জুয়েল বলেন, খুলনাকে তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অনেক কাজ চলমান রয়েছে। হাতিরঝিলের আদলে ময়ূর নদের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হবে।
সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা যায়, যানবাহনের চাপ বাড়ায় খুলনা মহানগরীর প্রবেশদ্বার ময়ূর নদের ওপর থাকা ব্রিটিশ আমলের একটি সেতুর পাশে ২০১৬ সালে আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়। দ্বিতীয় সেতুটি নির্মাণের পর থেকেই পানির স্তর থেকে সেতুটির উচ্চতা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। পাশাপাশি খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হলে দুটি সেতুই ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে খুলনা নাগরিক সমাজ এর সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, সাত বছর আগে ময়ূর নদীর ওপর গল্লামারী এলাকায় যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল তা ছিল অপরিকল্পিত। এত নিচু কোনো সেতু হতে পারে না। সে কারণে ওই টাকা এখন গচ্চা যাচ্ছে। অপরিকল্পিত এমন কাজের মাধ্যমে সরকারি অর্থ অপচয়ের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. আশিক-উর-রহমান বলেন, এ সেতু নির্মাণের পর বদলে যাবে নগরীর প্রবেশদ্বার চিত্র। ময়ূর নদীর দুই পাশে এখন যেই পরিবেশ রয়েছে সেটিরও পরিবর্তন হবে। সেতুটি ঘিরে বিনোদনের ব্যবস্থা হবে।