অবশেষে খুলনার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনে আরো একধাপ অগ্রগতি হয়েছে। খুলনা অঞ্চলের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ উন্নয়ন, ভবিষ্যত পরিকল্পনাসহ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৫০ একর জমি অধিগ্রহণে প্রশাসনিক অনুমোদন মিলেছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের নির্মাণ শাখা এ অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের স্বাক্ষরিত (১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩) এক চিঠিতে এ তথ্য জানাগেছে। এতে জমির সংশোধিত স্ক্যাচম্যাপ ও দাগসূচিও অনুমোদন দেওয়া হয়। অধিগ্রহণ করা জমির মূল্য ধরা হয়েছে ৪৫৬ কোটি ২ লাখ ২৩ হাজার ১৮৪ টাকা।
খুলনা অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুলনা সফরকালে বিষয়টি তাঁর কাছে উপস্থাপন করা হয়। ২০১৯ সালে খুলনা জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি পত্র প্রেরণ করেন। চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমির জন্য ১০০ একর জমির সংস্থানের বিষয়টিও জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী একই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর খুলনার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি দেন। ২০২০ সালের ১৩ জুলাই মন্ত্রিসভায় ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, খুলনা-২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন লাভ করে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিলটি সংসদে পাস ও ৪ ফেব্রুয়ারি গেজেট প্রকাশ হয়। একই বছর ২৯ এপ্রিল নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তিনি ৩ মে উপাচার্য পদে যোগ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আইনগত ভিত্তির পর খুলনার লবণচরা থানা সংলগ্ন এলাকার ১০০ একর জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অধিগ্রহণ করা জমিটির পরিমাণ কমিয়ে ৭০ একর নির্ধারণ করেন। পরে ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ভূমি অধিগ্রহণ অনুমোদন বিষয়ে দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জানিয়ে ফাইল ফেরত পাঠায়। ওই সময়ে ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় নিরুপন করা হয়েছে ৬১২ কোটি টাকা। কিন্তু দীর্ঘ সূত্রিতায় ভূমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রস্তাবিত জমির পরিমাণ কমেছে। বর্তমানে অস্থায়ী ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়টি খুলনা বিভাগের সরকারি-বেসরকারি ৯টি মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নাসিং ইনস্টিটিউট, টেকনোলজিসগুলো অধিভুক্ত করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রথম থেকে ৯৬০ শয্যা, ৪৮টি ডিপারমেন্ট চালু করা যাবে। ভবিষ্যতে এ শয্যা সংখ্যা এক হাজার ৯২০টি, ডিপারমেন্ট সংখ্যা ৬০টির বেশী বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।