আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনার ছয়টি আসনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার আশায় ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামীলীগের এক ঝাক নতুন মুখ। প্রতিদিন এসকল সম্ভাব্য প্রাথীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন কর্মসুচি ও পোষ্টার,প্যানা,ফেষ্টুন এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগনের কাছে লিফলেট আকারে পৌছে দিচ্ছেন। খুলনা জেলা ও মহানগরে ৬টি আসন রয়েছে। এই ছয়টি আসনের মধ্যে বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচনে খুলনা-২ আসনটি বিএনপির দখলে থাকলেও পরবর্তী ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে খুলনার ছয়টি আসনই ক্ষমতাসীন আ’লীগের দখলে রয়েছে।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা সরব। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আ’লীগে প্রতিটি আসনের বিপরীতে রীতিমতো প্রার্থী জট। একাধিক আসনে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, আসতে পারে নতুন মুখ। বিগত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা এবং দলীয় কর্মসুচিতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণা, প্যানা-ফেস্টুন দৃশ্যত চোখে পড়ার মতো।
সূত্রমতে, গেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসনে আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ৩৯ জন আবেদনপত্র গ্রহণ ও জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি একক প্রার্থী এমন সম্ভাবনায় এ আসনে কেই সম্ভাব্য প্রার্থীতার প্রচারনা নেই। বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনে সর্বাধিক আবেদনপত্র জমা পড়েছিল খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে ১৪ জন। আগামী নির্বাচনেও খুলনার একাধিক আসনের প্রার্থী পরিবর্তনের গুঞ্জন উঠেছে।
বর্তমান একাধিক সংসদ সদস্য নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও দলীয় প্রতিবেদনে উঠে আসা বির্তকিত বর্তমান সংসদ সদস্যরা বাদ পড়ার শঙ্কা রয়েছে। ফলে সে সব আসনে ‘ক্লিন ইমেজ’র জনপ্রিয় প্রার্থী খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এখন পর্যন্ত প্রস্তুতি নিচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্যদের পাশাপশী একঝাক নতুন মুখ।
খুলনা-১ (দাকোপ ও বটিয়াঘাটা) আসনে আ’লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দলীয় হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস, সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য এড. গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার ও জেলা আ’লীগ নেতা শ্রীমন্ত অধিকারী রাহুল। বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সোহেল দলীয় মনোনয়ন পেলে অবাক হবেন না দলীয় নেতা-কর্মীরা।
খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে একমাত্র প্রার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল।
খুলনা-৩ (খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, আ’লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, নগর আ’লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক শেখ মোঃ ফারুক হাসান হিটলু এবং তৎকালী পাকিস্থান পার্শামেন্টের সদস্য রুস্তম শেখের পুত্র ও সাপ্তাহিক অনন্ত প্রত্যাশা পত্রিকার সম্পাদক এ্যাডঃ শেখ আজাদ করিম।
আগামী নির্বাচনে খুলনা-৪ (রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার শিল্পপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এখন প্রচার-প্রচারণা করছেন জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ সুজিত অধিকারী, যুগ্ম-সম্পাদক শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু ও জেলা আ’লীগের যুগ্ন- সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান জামাল, প্রয়াত সংসদ সদস্য ও সংসদের হুইপ এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার ছেলে জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম খালেদীন রশিদী সুকর্ণ এবং নগর যুবলীগের আহবায়ক শফিকুর রহমান পলাশ। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য জড়িয়ে পড়েছেন নানা বিতর্কে।
খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া ও ফুলতলা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, জেলা আ’লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অজয় সরকার, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতি ও সদর থানা আ’লীগের সভাপতি এ্যাডঃ সাইফুল ইসলাম এবং অর্থনীতিবিদ ড. মাহাবুব উল ইসলাম ও খুলনা জেলা আ’লীগের নির্বাহী সদস্য আবাসন ব্যাবসায়ী আজগর বিশ^াস তারা মনোনয়ন প্রত্যাশী। ইতিমধ্যে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্যানায় ডুমুরিয়া ও ফুলতলাবাসীর মাঝে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন
এ্যাডঃ সাইফুল ইসলাম।
খুলনা-৬ (কয়রা ও পাইকগাছা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবু ছাড়াও এ আসনটিতে খুলনার সর্বাধিক প্রার্থী রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য এড. সোহরাব আলী সানা, জেলা আ’লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান জামাল, জেলা আ’লীগের কোষাধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার জি এম মাহবুবুল আলম, প্রয়াত সংসদ সদস্য এড. শেখ মোঃ নূরুল হকের ছেলে জেলা আ’লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলাম রাসেল, জেলা আ’লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ মোহাঃ শেখ শহীদ উল্লাহ এবং ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থী।