সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বৃহস্পতিবার , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
খুলনার দক্ষিণাঞ্চলে একটি সন্ত্রাসী পরিবারের কাছে জিম্মী গোটা এলাকা | চ্যানেল খুলনা

খুলনার দক্ষিণাঞ্চলে একটি সন্ত্রাসী পরিবারের কাছে জিম্মী গোটা এলাকা

চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ খুলনার দক্ষিণাঞ্চলে একটি সন্ত্রাসী পরিবারের কাছে জিম্মী হয়ে পড়েছে গোটা এলাকার মানুষ। খুন- ডাকাতি, ছিনতাই, অস্ত্র-মাদক, আদম ব্যবসা, হামলা- মারামারি, গায়ের জোরে সরকারী ও অন্যের জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। জনশ্রুতি রয়েছে তাদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বললেই তার উপর পড়ে বিভিন্ন স্টাইলে অত্যাচারের খড়গ। তাদের অব্যহত হুমকিতে বাড়ি ছাড়া হয়েছে এক সাংবাদিক।
সরজমিনে যেয়ে দেখা যায়, জেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী
ইউনিয়নের গাওঘরা গ্রামটি অবস্থিত। এই গ্রামেই বসবাস করেন খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী ক্রস ফাইয়ারে নিহত
লিটু বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড মুন্নাফ বিশ্বাসসহ তাদের সহযোগীরা। তাদের প্রভাবে এলাকার সাধারণ মানুষ
জিম্মী হয়ে পড়েছে। গ্রামের উত্তর প্রান্তে ছোট্ট বাজারটিতে প্রভাব বিস্তার করে বসে আছে ওই বাহিনীর সদস্য ও তাদের সহযোগীরা। খুন-ডাকাতি, অস্ত্র-মাদক, হামলা-মারামারি, গায়ের জোরে সরকারী ও অন্যের জমি দখল,
সাধারণ মানুষের উপর হামলা, নির্যাতন তাদের নিত্যদিনের ঘটনা। জনশ্রুতি রয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তাদের
বাড়িতে রাজাকারদের অস্থায়ী ক্যাম্প নির্মিত হয়,যার নিয়ন্ত্রন কর্তা ছিলো তার বাপ-চাচারা। সেখান থেকেই
ওই পরিবারটি মূলত ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে। প্রতিবেশী আসলাত নামে এক যুবককে খুন করার মধ্যদিয়ে তারা খুনের রাজনীতি শুরু করে। এক সময়ে বারআড়িয়া- কৈয়াঘাটে ট্রলার চালক গাওঘরা গ্রামের মৃত গফুর বিশ্বাসের ছেলে মুন্নাফ বিশ্বাসের সাথে খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী লিটু’র সাথে পরিচয় ঘটে। যার সূত্র ধরে তার অপর দুই ভাই মাসুদ
বিশ্বাস ও মারুফ বিশ্বাস এবং তাদের কতিপয় সহযোগীদের পরিচয়। এক সময়ের মুসলিমলীগ সমার্থিত পরিবারের সদস্যরা এই সুবাদে তারা জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। সেই থেকে আর তাদের পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। সন্ত্রাসী লিটু তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া ও সান্নিধ্য পাওয়ায় তারা অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। শুরু করে এলাকাজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব।
প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া, অন্যের জমি দখল, ডাকাতি, মাদক বেচা-কেনা, সাধারণ মানুকে মারধর-
নির্যাতন এবং হয়রানি তাদের নিত্যদিনের ঘটনায় পরিনত হয়। এসকল ব্যক্তিরা সাধারণ মানুষের কাছে এক মূর্তিমান আতংক হয়ে পড়ে। কেউ তাদের ভয়ে মূখ খুলতে সাহস পায়না। জনশ্রুতি রয়েছে মুন্নাফ বিশ্বাসের বাড়িতে লিটু বাহিনীর প্রধান লিটুর অবাদ যাতাওয়াত এবং অস্ত্রের মহড়া মানুষকে ভাবিয়ে তোলে। কিছুদিনের মধ্যে লিটুর সুন্দরবনসহ গোটা দক্ষিণ এলাকার দায়িত্ব পায় মুন্নাফ বিশ্বাস। সেই সুযোগে গোটা এলাকা তার নিয়ন্ত্রণে
আসে। চলতে থাকে ত্রাসের রাজত্ব। তৎকালিন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী কঠোরতায় ২০০০ সালে নামমাত্র ক’টি অস্ত্র জমাদান করেন মুন্নাফ বিশ্বাস। অল্পদিন যেতে না যেতেই আবারও অন্যায়-অপকর্ম শুরু করে। এক সময়ের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান শেখ জাহান আলী তাদের এসকল অন্যায় কর্মকান্ডের প্রতিবাদ শুরু করে। যার ফলে নির্বাচিত হওয়ার অল্পদিনের মাথায় সন্ত্রাসীদের বুলেটের আঘাতে তাকে প্রাণ হারাতে হয়। ঘটনার মাত্র ক’দিন আগে উক্ত মুন্নাফ বিশ্বাসের নামে শেখ জাহান আলী বটিয়াঘাটা থানায় জিডি দায়ের করেন। জনপ্রিয় এই চেয়ারম্যান হত্যা মামলার অন্যতম আসামী মুন্নাফ বিশ্বাস, তার আপন ভাই মাসুদ বিশ্বাস ও মারুফ বিশ্বাস। স্বাক্ষীদের ম্যানেজ করে আইনের ফাঁক- ফোকড়ে বেরিয়ে এসে তারা আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে।
মুন্নাফ বিশ্বাস সাধারণ একটি নাম মনে হলেও গাওঘরা গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে সে এক মূর্তিমান আতংক। ভয়ে কেউ মূখ খুলতে সাহস পায়না। বর্তমানে গাওঘরা বাজারের যেদিকে তাকাবে সেদিকেই তার দখলে।
ওয়াপদার রাস্তা জুড়ে মুন্নাফ বিশ্বাস ইট, বালি এবং বিভিন্ন মালামাল রেখে ব্যবসা পরিচালনা করছে। শুধু তাই
নয়, বাজারের মজিদ শেখ, জব্বার গোলদার, সাহেব আলী গাজীসহ অনেকের জমি গায়ের জোরে দখল করে নিয়েছে।
প্রতিবাদ করতে গেলে তার উপর পড়ে অত্যাচারের খড়গ। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জমি-জায়গা দখলের প্রতিবাদে অভিযোগ দাখিল করায় বাজারের এক ব্যবসায়ীর
প্যান্ট খুলে নিতে গিয়েছিলো, উক্ত মুন্নাফ বিশ্বাস ও তার ভাইয়েরা। এরপর থেকে আর কেউ অভিযোগ করতে সাহস
পায়না। সেই থেকে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে গেছে। যে কারনে সরকারী বা পানি উন্নয় বোর্ডের জায়গা দখল
করতে সে কাউকে তটস্থ করেনা। জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত মুন্নাফ বিশ্বাস ও মাসুদ বিশ্বাস রাতারাতি আওয়ামীলীগ সেজে তারা সংঘবদ্ধ ভাবে একের পর এক অন্যায় অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার অপর ভাই মারুফ
বিশ্বাস আজও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। শুধু মাত্র ভাই মাসুদ বিশ্বাস স্থানীয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হওয়ায় অন্যায় অপকর্ম দেধারছে চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক কারবারের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ। কিছুদিন আগে ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর খেয়াঘাটে কয়েশ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার ঘটানায় মাসুদ ও মারুফের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়। র‌্যাবের সাঁড়াশি অভিযানে মারুফ বিশ্বাস গাঁ ঢাকা দিলেও তার সহযোগী জাহাঙ্গীর দফাদার কয়েশ ইয়াবাসহ এবং তার ভাইপো হুমায়ুন বিশ্বাস মাদক সহ আটক হয়। মুন্নাফ বিশ্বাসের নামে হত্যা, অস্ত্রবাজি, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা হয়।
পুলিশের একটি অসাধুচক্রের সাথে তাদের সুসম্পর্ক থাকায় এধরনের অন্যায় কাজ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে তারা আবারও বেপোরয়া হয়ে উঠেছে। পরিকল্পিত ভাবে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও ক্ষতির
চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, তাদের চাঁদা দাবীর প্রতিবাদ করায় তারা যে কোন
সময়ে আমার জান-মালের ক্ষতি করতে পারে। গাওঘরা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ গাজী বলেন, এক সময়ে আমি তাদেরকে প্রকাশ্যে গাওঘরা বাজারে অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করতে দেখেছি, মারুফ বিশ্বাস আমার ক্রয়কৃত জমি উদ্ধার করে দেওয়ার কথা বলে ৪০ হাজার টাকা গ্রহণ করে,আজও জমি উদ্ধার হয়নি। টাকা ফেরত চাওয়ায় বিভিন্ন হুমকি-ধামকি অব্যহত রেখেছে। স্থানীয় পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ আলিসুজ্জামান বলেন, অনৈতিক দাবী রাখতে অস্বীকৃতি জানানোর দায়ে ইউপি সদস্য মাসুদ বিশ্বাস আমাকে মারধর করে। ব্যবসায়ী বিএম
আব্দুল হাই বলেন, মুন্নাফ বিশ্বাস আমার ভগ্নিপতিকে বিদেশ পাঠানোর নামে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে
নেয়, এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় আজও তা ফেরত পায়নি। চাইতে গেলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে। গাওঘরা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক, বটিয়াঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক এসএম
ফরিদ রানা বলেন, উপরোক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, মাদক, আদম ব্যবসা, সাধারণ মানুষকে হয়রানিসহ বহু অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। তাদের এসকল অন্যায় কর্মকান্ডের সংবাদ প্রকাশ এবং প্রতিবাদ করায় তারা
আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও জীবননাশের হুমকি- ধামকি অব্যহত রেখেছে। তাদের ভয়ে আমি বর্তমানে বাড়ি ছাড়া রয়েছি।
এ ব্যাপারে সুরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী সরদার বলেন, মুন্নাফ, মাসুদ, মারুফ ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অনেক। কথা বললে দোষ ও শত্রু হতে হয়। আমার আশংকা কখন তারা আমাকে ক্ষতি করে দেয়।
অভিযুক্ত মুন্নাফ বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিভিন্ন বিষয় এড়িয়ে বলেন, আমার ও আমার ভাইদের বিরুদ্ধে যে সকল মামলা হয়েছে তা আইনি মোকাবেলা করে আসছি।

 

https://channelkhulna.tv/

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল আরও সংবাদ

খুলনা বিভাগীয় বইমেলা শুরু ২৬ নভেম্বর, চলবে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত

ফকিরহাট স্ত্রী হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক

ময়লাপোতা মোড়ে মানববন্ধন থেকে নাগরিকদের হুশিয়ারী

ফকিরহাটে মাদক কারবারীকে কারাদন্ড ও জরিমানা

ফকিরহাটে নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

কালিয়ায় মদ্যপানে স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু, অসুস্থ আরেক ছাত্রী

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।