শাহ আরাফাত রাহীব :: ‘গাছ পাকা ফল, টাটকা-মিস্টি ফল’ এভাবে হাকডাক দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন খুলনার ক্লে রোড ও স্টেশন রোডের বিভিন্ন ফলের আড়তের ফল বিক্রেতারা। যশোরের বসুন্দিয়া আর ঈশ্বরদীর লিচু, সাতক্ষীরার হিমসাগর, রাজশাহীর গোবিন্দ ভোগসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশী আম বিক্রি চলছে মহা সমারোহে। খুচরা বিক্রেতারাও দর কষাকষি করে কিনছেন এই সব ফল। কেউ আবার দেখে ছুটছেন অন্য দোকানে। শুক্রবার খুলনার পাইকারি ফলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, জ্যৈষ্ঠ মাস শুরু হওয়াতে বিভিন্ন মৌসুমি ফলের সমাহার সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ঈদের পর থেকেই একটু একটু করে ক্রেতাও বেড়েছে। ফলে চাহিদা বেড়েছে মৌসুমি ফলের। আর ফলের চাহিদা বাড়ায় পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারেই বেড়েছে ফলের যোগান। পাশাপাশি ফল বাজার গুলোতে বিরাজ করছে উৎসব মূখর পরিবেশ।
এ বিষয়ে ক্লে রোডস্থ মা ফ্রুটস্ এর স্বতাধিকারী মোঃ লায়েক বলেন, গরম পড়তে শুরু করেছে, আর ফলও পাকতে শুরু করেছে। বাজারে যেমন ফল আসছে, তেমনি ক্রেতাও আছে। তবে দাম একেক জায়গায় একেক রকম। তবে দাম যেমনই হোক মৌসুমের প্রথম দিকে ফলের স্বাদ নিতে পেরে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই বেশ খুশি। বাজারে এখন আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ সবই পাওয়া যাচ্ছে। এসব ফলের দিকে ক্রেতাদের আগ্রহ অনেক বেশি।
খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পাকা কাঁঠাল ১০০ টাকা থেকে শুরু করে আকার ভেদে ২৫০ টাকা, প্রতিকেজি পাকা আম ১০০ টাকা থেকে জাতভেদে ৩০০ টাকা, প্রতি ১০০ পিস লিচু ২২০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, প্রতিকেজি জাম ৩০০ টাকা, প্রতিটি তরমুজ আকার ভেদে ৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি সফেদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১৫০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে আছে জামরুল। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। আছে তালশাস এবং পেঁপেও। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত লিচুর সরবরাহ থাকলেও আম, জাম, জামরুল ও কাঁঠালের সরবরাহ এখনও ব্যাপকহারে শুরু হয়নি।
বিক্রেতারা বলেন, যদিও কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে তবে সপ্তাহ খানেক পর ব্যাপকহারে কাঁঠালসহ অন্যান্য ফল বাজারে আসবে। খুচরা বাজারে কথা হয় ফল ক্রেতা শোয়েব এর সঙ্গে, কাঁঠাল আর তরমুজ কেনার পর ঘুরছিলেন লিচুর বাজারে। তিনি বলেন, এবার সব ফল যেন একসঙ্গেই এসেছে। অন্যান্যবার প্রতিটি ফল কিছু সময় ধরে পর পর এলেও এবার আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ সবই এখন বাজারে। তাই বেশকিছু ফল কিনেছি, আরও কিছু কেনার ইচ্ছে আছে। আশা করি সামনে সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন ফলের দাম আরও কমবে।
এদিকে মৌসুমি ফলের দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে। ফল বিক্রেতারা বলছেন, একদিকে ফল কেবল আসতে শুরু করেছে, অন্যদিকে তেলের দাম বেড়েছে। এতে বেড়েছে পণ্য পরিবহনের খরচও। এ কারণে ফলের দাম বেড়েছে। তবে ঈদের পর থেকে ক্রমেই ফলের সরবরাহ বাড়ছে। দামও আগের চেয়ে এখন অনেকটা কম। অন্যদিকে, বাজারে প্রতিকেজি মাল্টা ১৬০-১৮০ টাকা, আপেল ১৮০-২৪০ টাকা, আনার ৩৫০-৪০০ টাকা, পেয়ারা ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তালের শ্বাস প্রতিপিস ৩০ টাকা, আনারস প্রতিপিস ৩০-৪০ টাকা, ডাব ৬০-১০০ টাকা এবং সাদা আঙুর প্রতি কেজি ২২০-৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।