অনলাইন ডেস্কঃখুলনার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দিঘলিয়া উপজেলার নগরঘাটা ফেরীঘাটটির বরাদ্দ দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে পছন্দের ব্যক্তিকে পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ করেছেন দিঘলিয়া উপজেলার সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মোঃ ফিরোজ হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৬ মে নগরঘাটা ফেরীঘাটের ইজারার দরপত্র বিক্রয়ের শেষদিন ছিল। দরপত্র জমাদানের (ড্রপিং) শেষদিন ছিল ২৭ মে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। দরপত্র জমা দানের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিকেল তিনটার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে অফিস পিওন একটা দরপত্র নিয়ে আসে। পরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যোগসাজসে নিয়ম বহির্ভূতভাবে একটি দরপত্র দাখিল করে। এ ব্যাপারে তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর পুনরায় দরপত্র আহ্বানের আবেদন করেন। দরপত্র আহ্বানের আবেদন করলেও নির্বাহী প্রকৌশলী নানা টালবাহানার মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। অবশেষে নিরূপায় হয়ে ফিরোজ হোসেন আদালতের শরণাপন্ন হন। গত ২৬ জুন খুলনার সহকারী জজ আদালতে মামলা করলে আদালত নগরঘাটা ফেরীঘাটটি ফিরোজ হোসেনের অনুকূলে ২০ আগস্ট পর্যন্ত স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। এছাড়াও নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশকে ২১ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন আদালত। তারপরও নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশ আদালতের আদেশ অমান্য করে দুর্নীতির মাধ্যমে তার পছন্দের ব্যক্তিকে নগরঘাট ইজারা দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। অবৈধভাবে ঘাট অন্যকে ইজারা দেয়ার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশ ঢাকায় দৌড়-ঝাঁপ করছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী নগরঘাটের ইজারা তার পছন্দের ব্যক্তিকে পাইয়ে দিতে ওয়ার্ক অর্ডার করার জন্য ৮ জুলাই ঢাকায় সিএস প্রেরণ করেন। এ অবস্থায় ১৫ জুলাই ফিরোজ হোসেন সহকারী জজ আদালতে একটি আরজি দাখিল করেন। আদালত আরজি গ্রহণ করে বিবাদী নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশকে আগামী ২০ আগস্ট স্বয়ং অথবা একজন উকিল দ্বারা উপস্থিত হয়ে দরখাস্তের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর জন্য আদে দেন ।সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য মোঃ সেলিম আহমেদ, আ’লীগ নেতা মোঃ আফজাল হোসেন ও শেখ আনছার আলী প্রমুখ।
অপর একটি সুত্রে জানাগেছে, দির্ঘ দিন যাবত খুলনার সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভিন্ন নতুন সড়ক নির্মান,সড়ক সংস্কার,সওজ এর ভুমি বন্দবাস্ত,ফেরি ইজারা,ফেরি মেরামত,পরিবহন মেরামতসহ নানা খাতে অনিয়ম ও দুর্ণীতি ,ঠিকাদারের বিলে কমিশন ছিলো ওপেন সিক্রেট । আর এই অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করা সড়ক ভবনের পিয়ন থেকে শুরু করে তত্বাবধায়ক প্রকৌশল দপ্তরের সবাই জানে । এর জন্য অফিসে রয়েছে নির্দিষ্ট সিন্ডিকেট । সিন্ডিকেটের সাথে জরিতকয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ । অসাধু এসকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরদের বিরুদ্ধে রয়েছে পরিবারের সদস্যদের নামে বেনামে অঢেল জ্ঞাত আয় বহিভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ । সারা দেশের বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে দুর্ণীতির অভিযান চললেও খুলনা সড়ক ভবনেএ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের অনিয়ম করে যাচ্ছেন । এর মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হলেন সহকারী প্রকৌশলী মুকুল জ্যোতি বসু,উপ-সহকারী প্রকৌশলী বনশ্রী মজুমদার,উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মোমেন,হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা শেখ মনজুর কাদির,উচ্চমান সহকারী নজরুল ইসলাম, মোঃ কামরুজ্জামান,ওয়ার্কসুপারভাইজার আজাদ হোসেন । প্রকৌশলীদের মধ্যে রয়েছেনউপ-সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম,মোঃ মশিউর রহমান,কাজী আজিজুর রহমান, মোঃ মিজানুর রহমান,রফিকুল ইসলাম,এস,এম আসাদুজ্জামান । খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ সকল কর্মকর্তাদের নিজ ও পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে বেড়িয়ে আসবে সওজের দুর্ণীতির চিত্র ।সংবাদ সম্মেলন এবং সড়ক ভবনে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশ সড়ক ভবনে দুর্ণীতি ও অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ফিরোজ হোসেন যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট । সওজ নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নগরঘাটের ইজারা দেয়া হয়েছে।