চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃনগরীর টুটপাড়ার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক ফাতেমা-তুজ-জোহরা গত ১৩ নভেম্বর রূপসা স্ট্যান্ড রোডের মেসার্স মেহেদী ট্রেডার্স থেকে ওমেরা গ্যাস কিনেছিলেন ৯৫০ টাকায়। দু’দিন পর ১৫ নভেম্বর একই বাড়িতে তার মা লুৎফুন নাহার একই গ্যাস কিনতে হলো একশ’ টাকা বেশিতে এক হাজার ৫০ টাকায়। গত এক বছরে দফায় দফায় লিকুইড পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায়। সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর থেকে সিলিন্ডার প্রতি মূল্য ফের বৃদ্ধি পেয়েছে অন্তত সাড়ে ১০ শতাংশ। তার আগে গত ৭ মার্চ বৃদ্ধি পেয়েছিল সাত শতাংশ। খুলনায় পাইপ লাইনে গ্যাস না থাকায় ছোট-বড় সব ধরনের কল-কারখানা এবং রান্নার কাজে এলপি গ্যাস ব্যবহৃত হয়। এজন্য গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি প্রভাব পড়েছে রান্নাঘর থেকে সর্বত্রই। পরিবেশকরা বলছেন, এলপি গ্যাসের দাম আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে আরও বৃদ্ধি পাবে।
গ্রাহক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, ২০১৮ সালের ৬ জুলাইয়ে প্রথম দফা, ১ আগস্ট দ্বিতীয় দফা, ১ সেপ্টেম্বের তৃতীয় দফা এবং ওই বছরের ১ অক্টোবর চতুর্থ দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায়। কয়েক মাস আগেও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১২ কেজি এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়। চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত ১২ কেজির সিলিন্ডার বিক্রি হয়েছিল ৮৭০ টাকা দরে। আর ৭ মার্চ সিলিন্ডার প্রতি ৭০-৮০ টাকা বৃদ্ধি করে বিক্রি করা হয় সাড়ে ৯০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত কার্যকর ছিল। গত ১৫ নভেম্বর থেকে আরেক দফায় ১০০ টাকা দাম বেড়ে বিভিন্ন কোম্পানীর ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে ১১শ’ টাকায়। এছাড়া ১৫ কেজি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা, বিভিন্ন হোটেলে ব্যবহৃত ৩৫ কেজির সিলিন্ডারে বেড়েছে ৬০০ টাকা, ৪৫ কেজির সিলিন্ডারে বেড়েছে এক হাজার ১০০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহত্তর খুলনার কোথাও প্রাকৃতিক গ্যাস না থাকায় এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা বোতলজাত এলপি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। বিপুল এ চাহিদার কথা মাথায় রেখে এ অঞ্চলে একাধিক কোম্পানী গড়ে উঠেছে। প্রতিযোগিতা থাকায় এলপি গ্যাসের দাম কম হওয়ার কথা। কিন্তু প্রতিনিয়ত দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ গ্রাহকের সাথে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরাও।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এলপি গ্যাস উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট করে এলপি গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে।
তবে খুলনা জেলা এলপি গ্যাস ডিলার ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শায়ের আহম্মেদ বিটু বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, শীত মৌসুমে বিশ্ব বাজারে লিক্যুইড পেট্রোলিয়ামের দাম বৃদ্ধি পায়। এটা নতুন নয়; প্রতি বছরেই এ ঘটনা ঘটে। এলপি গ্যাসের দাম আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত প্রতি মাসেই বৃদ্ধি পাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণেই বছরের এ সময়ে এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায়। মার্চের পর যখন গরম চলে আসবে তখন গ্যাসের দাম কমবে। গ্যাসের দাম বাড়লে বিক্রি হয় কম, যা ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।